জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে এসে শুরুতেই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পকে সঙ্গে নিয়ে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে প্রবেশের সময় একটি চলন্ত সিঁড়িতে ওঠেন তিনি। কিন্তু ওঠার পরপরই সেটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে সিঁড়ির বাকি অংশ পায়ে হেঁটে উঠতে তাদের।
পরে ভাষণের সময় দেখা যায়, ট্রাম্পের জন্য নির্ধারিত টেলিপ্রম্পটারটিও কাজ করছে না। এই দুই ঘটনা প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, “জাতিসংঘ এখন যেন সেই চলন্ত সিঁড়ির মতো—মাঝপথে থেমে যায়। কিংবা একটা ভাঙা টেলিপ্রম্পটার, যেটির ওপর ভরসা রাখা যায় না।”
এরপর প্রায় ৫৬ মিনিট ধরে তিনি বক্তব্য দেন—যেখানে জাতিসংঘের কড়া সমালোচনা করেন। বলেন, “এই সংস্থা তার প্রকৃত ক্ষমতা কখনোই কাজে লাগাতে পারেনি। শান্তি, নিরাপত্তা বা উন্নয়নে জাতিসংঘ এখন কার্যকারিতা হারিয়েছে।”
ভাষণে তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ অভিবাসনের নামে পশ্চিমা দেশগুলোর উপর চাপ তৈরি করছে। ইউরোপীয় দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেন, “অভিবাসন ও জলবায়ু নিয়ে ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট’ থাকার ঝুঁকি নিচ্ছে ইউরোপ, যা শেষ পর্যন্ত তাদেরই ক্ষতি করবে।”
গাঁজা যুদ্ধ ও ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেন ট্রাম্প। বলেন, “গাঁজায় যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে।” ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘সবচেয়ে সহজে সমাধানযোগ্য’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সম্প্রতি যেসব দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, “এই স্বীকৃতি আসলে হামাসের নৃশংসতার জন্য একধরনের পুরস্কার।”
নিজের শাসনামলের সফলতা তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, “আমার নেতৃত্বে আমরা অন্তত সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করেছি। প্রত্যেকটি যুদ্ধ বন্ধই একটি করে নোবেল পাওয়ার মতো কাজ। তবে আমি পুরস্কারের পেছনে ছুটি না, আমি আমেরিকাকে মহান করার পথে আছি।”
ভাষণের শেষ দিকে ট্রাম্প বলেন, “আপনারা যদি আবার মহান হতে চান, তাহলে আপনাদের সীমান্ত রক্ষা করতে হবে এবং প্রচলিত জ্বালানির উৎসকে শক্তিশালী করতে হবে।”