মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন একটি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, যা এক সপ্তাহের কম সময়েই শেষ হওয়া উচিত ছিল। তিনি মনে করেন, এটি রাশিয়ার জন্য কোনো গর্বের বিষয় নয়, বরং এটি তাদের ‘কাগুজে বাঘ’ হিসেবে প্রমাণ করছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক বৈঠকের পর ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) নিজের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে তিনি লেখেন, “আমি মনে করি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ইউক্রেন তাদের সম্পূর্ণ ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, “সময়, ধৈর্য এবং বিশেষ করে ন্যাটোর আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে যুদ্ধ-পূর্ব সীমান্ত পুনরুদ্ধার করা একেবারেই সম্ভব। কেন সম্ভব নয়?”
ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধ ব্যয়ের কারণে তাদের অর্থনীতি ব্যাপক চাপে রয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেনের মনোবল আশ্চর্যজনকভাবে শক্তিশালী এবং দিন দিন বাড়ছে। “আমি বিশ্বাস করি, ইউক্রেন তাদের দেশকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারবে— এমনকি তার চেয়েও ভালোভাবে!”
তিনি আরও বলেন, “পুতিন ও রাশিয়া বড় ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যায় রয়েছে। এখনই ইউক্রেনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার সময়। যাই হোক, আমি উভয় দেশের মঙ্গল কামনা করি। আমরা ন্যাটোর জন্য অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখব, যাতে তারা প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে পারে। সবাইকে শুভকামনা!”
মস্কোর পাল্টা প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের মন্তব্যের ঠিক একদিন পর, ২৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ট্রাম্প সম্ভবত জেলেনস্কির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টি শুনেছেন। “এই মুহূর্তে আমরা যা শুনছি, তা মূলত জেলেনস্কির চোখ দিয়ে দেওয়া মূল্যায়ন। আমরা তার সব বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই।”
ইউক্রেন যুদ্ধ ‘জিততে’ পারবে— ট্রাম্পের এমন পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করে পেসকভ বলেন, “আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। এটি আমরা দেশের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য করছি। এর কোনো বিকল্প নেই।”
ট্রাম্পের ‘কাগুজে বাঘ’ মন্তব্যের জবাবে পেসকভ বলেন, “রাশিয়া খুব একটা বাঘের মতো নয়। রাশিয়াকে সাধারণত একটি ভাল্লুকের সঙ্গে তুলনা করা হয়। আর ‘কাগজের ভাল্লুক’ বলে কিছু নেই। রাশিয়া হলো একটি সত্যিকারের ভাল্লুক। প্রেসিডেন্ট পুতিন বহুবার বিভিন্নভাবে এই ভাল্লুকের কথা বলেছেন— তার মাঝে কাগজের কিছু নেই।”
ট্রাম্প যখন রুশ জ্বালানি কেনা বন্ধ করে মস্কোর ওপর চাপ তৈরির আহ্বান জানান, তখন পেসকভ তা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “ট্রাম্প একজন সাবেক ব্যবসায়ী। তিনি তাদের (আমেরিকার) জ্বালানি বিক্রি বাড়াতে চান, সেটাই স্বাভাবিক।”