ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সময় শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। তবে তিনি জানিয়েছেন, মাদুরো চাইলে এখনো শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ছাড়ার সুযোগ আছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৫৮ বছর বয়সী মাচাদো বলেন, “প্রেসিডেন্ট মাদুরোর হাতে এখনো শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যদি তিনি স্বেচ্ছায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেন, আমরা তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে প্রস্তুত।”
মাচাদো আরও বলেন, “আমরা আলোচনার আগে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলব না, তবে তিনি যদি প্রতিরোধ চালিয়ে যান, তার পরিণতি হবে তাঁর নিজের দায়িত্ব। আলোচনা হোক বা না হোক, মাদুরোকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে।”
সম্প্রতি নোবেল শান্তি পুরস্কার জয় সম্পর্কে মাচাদো বলেন, “এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় বিস্ময়গুলোর একটি।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, তাঁর এই পুরস্কার ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক চাপে মাদুরো সরকারকে অপসারণের পথ সুগম হবে।
মাচাদো অভিযোগ করেন, মাদুরো ও তাঁর পূর্বসূরি হুগো শাভেজের অধীনে ভেনেজুয়েলায় একচেটিয়া ক্ষমতা ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে। তবে তিনি আশাবাদী যে, পরিবর্তনের সময় এসে গেছে। তিনি বলেন, “যারা গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবেন, বিশেষ করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা, তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হবে।”
মাচাদো জানান, সেনা, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে তাঁর বার্তা পৌঁছে গেছে এবং তারা ধীরে ধীরে বিরোধী শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা সবাই নাগরিক, এবং সামরিক বাহিনীরও এই পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।”
এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কিত সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার ভেতরে সম্ভাব্য সামরিক হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার আশপাশে আটটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে যা ১৯৮৯ সালে প্যানামায় মার্কিন আগ্রাসনের পর পশ্চিম গোলার্ধে সবচেয়ে বড় সামরিক পদক্ষেপ।
মাদুরো এই পরিস্থিতিতে মাচাদোকে ‘শয়তানি জাদুকরী’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে মাচাদো জানিয়েছেন, তিনি ওয়াশিংটন, ইউরোপ এবং লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
তিনি বলেন, “আমার নোবেল জয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মোতায়েন মাদুরো সরকারের জন্য বড় ধাক্কা। পুরো বিশ্ব জানে তারা পরাজিত। জনগণ ইতোমধ্যেই বিজয়ের পথে রয়েছে।”