ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো পেয়েছেন ২০২৫ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার। দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে তাঁর নিরলস সংগ্রাম এবং অনমনীয় নৈতিক নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ শুক্রবার নরওয়ের অসলোতে নোবেল কমিটি তাঁর নাম ঘোষণা করে।
নোবেল কমিটি জানায়, “স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের লড়াইয়ে মারিয়া কোরিনা মাচাদো অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ভয়কে উপেক্ষা করে নাগরিক অধিকারের জন্য লড়েছেন, যা বিশ্বজুড়ে সাহসের প্রতীক।”
ভেনেজুয়েলার ‘আয়রন লেডি’ নামে পরিচিত মাচাদো গত ১৪ মাস ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন। নিকোলাস মাদুরো সরকারের কঠোর দমননীতি, ভুয়া নির্বাচনে জয় ঘোষণার পর তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা ও গ্রেপ্তারের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তবুও তিনি আন্দোলন চালিয়ে গেছেন, নাগরিকদের সংগঠিত করেছেন এবং স্বাধীন নির্বাচনের দাবি তুলেছেন।
দ্য নোবেল প্রাইজ ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, “মাচাদো মানবাধিকার লঙ্ঘন ও রাজনৈতিক দমননীতির বিরুদ্ধে অকুতোভয়ভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি কেবল ভেনেজুয়েলার নয়, গোটা লাতিন আমেরিকায় গণতন্ত্রের প্রতীক।”
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও শান্তিতে নোবেলের আলোচনায় ছিলেন। এ বছর একাধিক সংঘাতের অবসান ঘটানো এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদনের পর তাঁর নাম ঘিরে জল্পনা ছড়ায়। তবে নোবেল কমিটি জানায়, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল জানুয়ারির ৩১ তারিখ; ফলে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সাফল্যগুলো ২০২৬ সালের নোবেল বিবেচনায় আসতে পারে।
গত বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছিল জাপানি সংগঠন ‘নিহন হিদানকিও’, যারা হিরোশিমা ও নাগাসাকির পারমাণবিক হামলার বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
বিশ্লেষকদের মতে, মারিয়া কোরিনা মাচাদোর জয় শুধু ভেনেজুয়েলার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নয়, এটি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী নৈতিক প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে থাকবে।