বিরল খনিজের রফতানি নিয়ন্ত্রণে চীনের নতুন নীতিতে ক্ষুব্ধ আমেরিকা এবার জোট গঠনের পথে হাঁটছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র এমন সব বন্ধুপ্রতিম দেশকে একত্রিত করতে চাইছে, যারা চীনের একচ্ছত্র আধিপত্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে জবাব দিতে প্রস্তুত। এই জোটে ভারতসহ অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় দেশ এবং অন্যান্য এশীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মার্কিন অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, চীনের বিরল খনিজ রফতানি নিয়ন্ত্রণ নীতির বিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত প্রতিক্রিয়া দিতে চায় ওয়াশিংটন। তিনি বলেন, “চীনের জনগণ সারা বিশ্বের উৎপাদন ও বাণিজ্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আমরা এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে চাই।”
চীন বিশ্বে বিরল খনিজের প্রায় ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। এই খনিজ সামরিক, প্রযুক্তি ও শিল্প খাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি বেইজিং ঘোষণা দিয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে তারা এই খনিজের রফতানি নিয়ন্ত্রণ করবে এবং সামরিক খাতে ব্যবহারের আশঙ্কা থাকলে তা বিক্রি করবে না। এর জবাবে ট্রাম্প চীনা পণ্যে ১০০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যা কার্যকর হলে মোট শুল্ক দাঁড়াবে ১৩০ শতাংশ।
বেসেন্ট জানান, চলতি সপ্তাহেই ইউরোপ, ভারত ও অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই দেশগুলো থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাওয়া যাবে।
তবে ভারতের অবস্থান নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। রাশিয়া থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে আমেরিকা ভারতের বিরুদ্ধে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে। ফলে বিরল খনিজ ইস্যুতে ভারত আদৌ আমেরিকার পাশে দাঁড়াবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই জোট গঠনের মাধ্যমে আমেরিকা শুধু চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব কমাতে চায় না, বরং বিশ্ববাজারে বিরল খনিজের সরবরাহ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে একটি বিকল্প কাঠামো গড়ে তুলতে চায়। এতে করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যও নতুন সুযোগ তৈরি হতে পারে।
এই উদ্যোগ সফল হলে, বিশ্ববাজারে চীনের একচ্ছত্র আধিপত্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। তবে ভারতের সিদ্ধান্তই হতে পারে এই জোটের ভবিষ্যতের অন্যতম নির্ধারক।