সর্বশেষ

শ্রীপুরে মামলাবাজদের দৌরাত্ম্যে নিরীহ মানুষের কারাভোগ

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৩২
শ্রীপুরে মামলাবাজদের দৌরাত্ম্যে নিরীহ মানুষের কারাভোগ

৫ই আগস্ট ২০২৪-এর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মামলা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মামলাবাজদের দৌরাত্ম্যে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকা নিরীহ ব্যক্তিরাও আজ কারাভোগ করছেন। সামান্য পার্কিং বিরোধ থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে মানুষকে মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব মামলার নেপথ্যে রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র, যারা অর্থ ও প্রভাবের জোরে মামলা-মামলা খেলায় মেতে উঠেছে।

 

শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি সদস্য ও শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, রাস্তার জন্য জায়গা না ছাড়ায় পৌর বিএনপি নেতা বিল্লাল ব্যাপারি তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী মেঘনা নামে এক ব্যক্তি হলেও মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বিল্লাল। বিএনপি মহানগর নেতার কাছে অভিযোগ জানালে বিল্লাল জানান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করায় তাকে আসামি করা হয়েছে।

 

বরমী এলাকার শরীফুল ইসলাম গাড়ি পার্কিং নিয়ে প্রবাসফেরত এনামুল হক মোল্লার সঙ্গে তর্কে জড়ান। এরপর শরীফুলকে অন্য একটি মারামারির মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। শরীফুলের পরিবার জানায়, এনামুল বিএনপির সাবেক ছাত্রদল নেতা, বর্তমানে মামলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছেন।

 

শ্রীপুর থানায় ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলায় বাদী করা হয় সুরোজ মিয়াকে। তিনি জানান, এনামুল হক মোল্লা জোর করে তাকে বাদী বানিয়েছেন, মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না।

 

স্থানীয় ব্যবসায়ী ইব্রাহিম জানান, নোমান গ্রুপের ঝুট ব্যবসা না দেওয়ায় বিএনপি নেতা রাজীবুল, আবুল ও সালাম তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। মামলার দুই বাদী কুলসুম ও খায়ের আদালতে গিয়ে জানান, তারা মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না এবং নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন।

 

শ্রীপুরে অন্তত দুই শতাধিক শিল্প কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বিল্লাল ব্যাপারির হাতে। তার বিশাল বাহিনী ও প্রভাবের কাছে অসহায় সাধারণ ব্যবসায়ীরা। এমনকি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন। একটি অডিওতে শোনা যায়, বিল্লাল একজন কর্মীকে বলেন, “আমি টাকা দিয়ে ব্যবসা করি, মিছিল-মিটিংয়ে তো তোমাকে দেখি নাই।”

 

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে বিল্লাল ব্যাপারি শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং কোনো বার্তার উত্তরও দেননি।

সব খবর

আরও পড়ুন