সর্বশেষ

নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী ‘বালিশ মিষ্টি’ পেল জিআই স্বীকৃতি

প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৩৫
নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী ‘বালিশ মিষ্টি’ পেল জিআই স্বীকৃতি

নেত্রকোনার শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী ও অনন্য মিষ্টান্ন ‘বালিশ মিষ্টি’ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই (Geographical Indication) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) সম্প্রতি এ মিষ্টিকে দেশের ৫৮তম জিআই পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

 

প্রায় ১২০ বছরের ইতিহাস বহন করে চলা বালিশ মিষ্টির উৎপত্তি নেত্রকোনা শহরের বারহাট্টা রোডে। স্থানীয় মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক গয়ানাথ ঘোষ প্রথম এই মিষ্টি তৈরি করেন। ছোট বালিশের মতো লম্বাটে ও নরম-তুলতুলে গড়নের জন্য এর নামকরণ হয় ‘বালিশ মিষ্টি’। সাধারণ সন্দেশ কিংবা রসগোল্লা থেকে একেবারেই ভিন্ন স্বাদের এ মিষ্টি এখন নেত্রকোনার সামাজিক অনুষ্ঠান, উৎসব এবং উপহারের অপরিহার্য অংশ।

 

গয়ানাথ ঘোষের নাতি ও গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভান্ডারের বর্তমান কর্ণধার বাবুল চন্দ্র মোদক বলেন,

 

বালিশ মিষ্টি জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা অত্যন্ত গর্বিত। দাদার হাতে যে মিষ্টির সূচনা হয়েছিল, তা আজ দেশের গৌরবের প্রতীকে পরিণত হলো। 

 

তিনি জানান, ১৯৬৫ সাল থেকে তার বাবা নিখিল চন্দ্র মোদক এই ব্যবসা চালিয়ে আসেন এবং বর্তমানে তৃতীয় প্রজন্মের তিন ভাই মিলে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন।

 

২০২৩ সালে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ডিপিডিটির কাছে বালিশ মিষ্টির জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়। মিষ্টির ইতিহাস, উৎপাদন প্রক্রিয়া ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যের বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে সম্প্রতি এ স্বীকৃতি মেলে।

 

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন,

 

এর আগে দুর্গাপুরের বিজয়পুরের সাদামাটি জিআই সনদ পেয়েছিল। এবার বালিশ মিষ্টি যুক্ত হওয়ায় জেলার গৌরব আরও বেড়ে গেল। আমরা এটিকে জেলার ব্র্যান্ডিং হিসেবে বিশ্বে তুলে ধরতে কাজ করব।

 

এর আগে ২০২১ সালে নেত্রকোনার দুর্গাপুরের বিজয়পুরের সাদামাটি জিআই স্বীকৃতি পেয়েছিল। ২০২৫ সালে এসে বালিশ মিষ্টির এই অর্জন নেত্রকোনার ইতিহাসে যুক্ত করল আরেকটি গৌরবের অধ্যায়। শতবর্ষ আগে স্থানীয়ভাবে তৈরি এই মিষ্টি এখন শুধু নেত্রকোনার পরিচয় নয়, বরং আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সব খবর