সর্বশেষ

ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২৫, ২২:৫৫
ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিরোধী মতের লোকজনকে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় অভিযোগ আমলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ আমলে নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন।

 

ট্রাইব্যুনালের অপর দুই বিচারক হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে প্রধান কৌঁসুলি মো. তাজুল ইসলাম এদিন মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করেন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন জানান।

 

দুই মামলার একটিতে র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে এবং অন্যটিতে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি)-এ বন্দিদের নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে। টিএফআই সেলের মামলায় ১৭ জন এবং জেআইসি সেলের মামলায় ১৩ জন আসামি রয়েছেন।

 

দুই মামলাতেই প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক—লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী ও মেজর জেনারেল হামিদুল হক—এর নাম রয়েছে।

 

ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে পরবর্তী শুনানির তারিখ ২২ অক্টোবর নির্ধারণ করেছে।

 

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই সরকারের অংশীজনরা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিরোধী মতের বহু ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়া ও গোপন আটককেন্দ্রে নির্যাতনের অভিযোগ তু্লতে শুরু করেন। উল্লেখ্য, ‘আয়নাঘর’ নামে গোপন বন্দিশালার কথা বারংবার বলা হলেও গত ১৩ মাসে সেসব বন্দিশালার অস্তিত্ব প্রমাণ করতে পারেনি সরকার।

 

এইসব ঘটনার তদন্তে ২০২৪ সালে সরকার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে। কমিশনের প্রতিবেদনে দাবী করা হয়, এসব গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

 

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ডিজিএফআই, এনএসআই, র‌্যাব ও পুলিশের ডিবি এবং কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা গেছে।

এছাড়া কমিশন জানায়, ডিজিএফআই পরিচালিত ‘ব্ল্যাক সাইট’গুলোর মধ্যে ‘আয়নাঘর’ ছিল সবচেয়ে কুখ্যাত, যেখানে বন্দিদের সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রেখে নির্যাতন চালানো হতো।

 

অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে “গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫”-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে, যেখানে গুমের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

সব খবর