সদ্য সমাপ্ত দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৭৯৩টি পূজামণ্ডপে প্রতিমা নির্মাণে যুক্ত শিল্পী, পূজারী ও আয়োজকদের বিরুদ্ধে “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত” হানার অভিযোগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
৫ অক্টোবর দেওয়া ওই ঘোষণার পর বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের এবং রাষ্ট্রীয় তদন্ত শুরু হওয়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের এই ধরনের বক্তব্য ও পদক্ষেপ দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার পরিপন্থী এবং সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উৎসাহিত করতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে দুর্গোৎসবের প্রতিমা নির্মাণে শিল্পীরা অশুভ শক্তির প্রতীক হিসেবে বিভিন্ন অবয়ব ব্যবহার করে আসছেন, যা ধর্মীয় রীতির অংশ এবং এই বছরেও তা ব্যতিক্রম নয়। অথচ এবার সেই চর্চাকে “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত” হিসেবে চিহ্নিত করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে হয়রানি ও নিপীড়নের মুখে ফেলতে পারে।
ঐক্য পরিষদ মনে করে, দুর্গোৎসব শুরুর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য কিছু চক্রের হাতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। সেই সময় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
বিবৃতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, যেন সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিশেষ তকমা দিয়ে আইনকে নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করা হয়। পাশাপাশি অসাম্প্রদায়িক, মুক্তমনা ও মানবিক সামাজিক শক্তিকে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বার্তা পরিবেশন করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। তিনি বলেন, “আমরা চাই একটি ন্যায্য, মানবিক ও সহনশীল বাংলাদেশ, যেখানে ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে কোনো সম্প্রদায়কে ভয় বা নিপীড়নের মুখে পড়তে না হয়।”