সরকারি কর্মচারীরা নতুন পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী ডিসেম্বর মাসে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কমিশনকে দেওয়া আলটিমেটামের আগেই কর্মচারী নেতারা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে কয়েক ডজন কর্মচারী সংগঠন অংশ নেয়। সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীতে মহাসমাবেশ আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।
কর্মচারী নেতারা জানান, কমিশনকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তারা স্পষ্ট করেছেন, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পে কমিশন সুপারিশ জমা না দিলে কঠোর আন্দোলনে নামতে হবে। এ অবস্থায় ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ হবে আন্দোলনের প্রথম ধাপ।
অর্থ উপদেষ্টা কমিশন গঠনের সময় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বর্তমান সরকারই নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করবে। তবে সম্প্রতি তিনি জানান, নির্বাচিত সরকারই কমিশনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এ বক্তব্যে কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বিভিন্ন সংগঠন একজোট হয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়।
পে কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সুপারিশ তৈরির কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। বর্তমানে একটি খসড়া তৈরির কাজ চলছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই সপ্তাহে সচিবদের মতামত গ্রহণের পর কমিশন রিপোর্ট চূড়ান্তকরণের দিকে এগোবে।
প্রসঙ্গত, গত জুলাইয়ের শেষ দিকে সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে সভাপতি করে ২৩ সদস্যের জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫ গঠন করে সরকার। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ ছিল, কমিশনের প্রথম সভার তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। অর্থাৎ ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে কমিশনের সুপারিশ জমা দেওয়ার কথা।
কর্মচারী সংগঠনগুলো বলছে, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির কারণে বর্তমান বেতন কাঠামো আর যথেষ্ট নয়। নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন ছাড়া কর্মচারীদের আর্থিক চাপ কমানো সম্ভব নয়। তারা আশা করছেন, মহাসমাবেশের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে এবং দ্রুত নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হবে।
সব মিলিয়ে, ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কমিশনের সুপারিশ জমা না হলে কর্মচারীরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন নেতারা।