সর্বশেষ

দুর্বল পাসপোর্টের তালিকায় বিশ্বে সপ্তম

ভিসা কড়াকড়িতে গ্রহণযোগ্যতা কমছে বাংলাদেশি পাসপোর্টের

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:০১
“একসময় যেসব দেশে ভিসা ছাড়াই যাওয়া যেত, এখন সেসব দেশেও ভিসা বাধ্যতামূলক।”
ভিসা কড়াকড়িতে গ্রহণযোগ্যতা কমছে বাংলাদেশি পাসপোর্টের

বিশ্বজুড়ে ভিসা নীতির কড়াকড়ি এবং অভিবাসন অনিয়মের কারণে বাংলাদেশের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা দ্রুত কমছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স প্রকাশিত ২০২৫ সালের গ্লোবাল পাসপোর্ট সূচকে ১০৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম, যা এখন বিশ্বের সপ্তম দুর্বলতম পাসপোর্ট হিসেবে চিহ্নিত।

 

অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসার অপব্যবহার, অবৈধ অভিবাসন, ও বিদেশে কিছু বাংলাদেশির অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশ এখন ভিসা প্রদানে অনাগ্রহী হয়ে পড়েছে এবং বিমানবন্দরে বাংলাদেশি যাত্রীদের অতিরিক্ত জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করা হচ্ছে।

 

সাবেক কূটনীতিক মুনশি ফয়জ আহমদ বলেন, “বিদেশে কিছু নাগরিকের অসদাচরণ ও অবৈধ কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের প্রতি আস্থা কমিয়ে দিয়েছে। একসময় যেসব দেশে ভিসা ছাড়াই যাওয়া যেত, এখন সেসব দেশেও ভিসা বাধ্যতামূলক।”

 

ডেটা অনুযায়ী, ২০০৬ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৬৮তম, যা ২০২৫ সালে নেমে এসেছে ১০০তম স্থানে। বর্তমানে বাংলাদেশি নাগরিকরা মাত্র ৩৮টি গন্তব্যে ভিসামুক্ত বা অন-অ্যারাইভাল সুবিধা পাচ্ছেন, যেখানে ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪৩।

 

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মালদ্বীপের অবস্থান সবচেয়ে ভালো (৫৬তম), এরপর ভারত (৮৫তম), ভুটান (৯২তম), শ্রীলঙ্কা (৯৮তম), বাংলাদেশ (১০০তম), নেপাল (১০১তম) ও পাকিস্তান (১০৩তম)।

 

বিশ্বে সিঙ্গাপুর শীর্ষে আছে ১৯৩ গন্তব্যে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার নিয়ে। অপরদিকে, আফগানিস্তান তালিকার সর্বনিম্নে, যেখানে প্রবেশাধিকার মাত্র ২৪ গন্তব্যে।

 

অভিবাসন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ একাধিক দেশ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে ভিসা প্রক্রিয়ায় সময় বাড়ানো, অতিরিক্ত নথি চাওয়া এবং বিমানবন্দরে ‘অফলোড’ বা ফেরত পাঠানোর ঘটনা বেড়েছে।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু অনিয়ন্ত্রিত ভ্রমণ সংস্থা ও অনলাইন এজেন্ট ‘ট্যুরিস্ট ভিসা’ ব্যবহার করে শ্রমিক প্রেরণ করছে, যা বাংলাদেশের পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা আরও ক্ষুণ্ন করছে।

 

গ্রিন হলিডেজ ট্যুরসের সিইও এমদাদ বোরহান উদ্দিন বলেন, “অবৈধ ভ্রমণ ও জাল কাগজপত্র ব্যবহারকারীরা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। সরকারকে ভুয়া এজেন্সি বন্ধ করে অভিবাসন খাতের ওপর কড়া নজরদারি বাড়াতে হবে।”

সব খবর