সর্বশেষ

ইতালি কর্মী নিতে চায়, তবে অবৈধ মানব পাচার নিয়ে উদ্বেগে দেশটির সরকার

প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:১৮
ইতালি কর্মী নিতে চায়, তবে অবৈধ মানব পাচার নিয়ে উদ্বেগে দেশটির সরকার

ইতালি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নিতে আগ্রহী। তবে এর জন্য প্রয়োজন সঠিক তথ্য, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া এবং দুই দেশের মধ্যে কার্যকর সহযোগিতা। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্তোনিও অ্যালেসান্দ্রোর সঙ্গে বৈঠকে এই তথ্য উঠে আসে।

 

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বৈধ অভিবাসন, মানব পাচার প্রতিরোধ এবং অভিবাসন-সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন নিয়ে আলোচনা হয়।

 

বর্তমানে ইতালিতে বৈধভাবে বসবাস করছেন প্রায় ২ লাখ বাংলাদেশি। তবে অবৈধভাবে অবস্থান করছেন আরও প্রায় ৭০ হাজার। এরইমধ্যে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন প্রায় ৪০ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক। তবে ইতোমধ্যে এসব আবেদনগুলোর ৯৮ শতাংশ বাতিল করেছে দেশটির সরকার।

 

অনেক বাংলাদেশি ভুয়া কাগজপত্র বা ভুল তথ্য ব্যবহার করে ইতালিতে প্রবেশ করছেন, যা দেশটির অভিবাসন ব্যবস্থায় চাপ সৃষ্টি করছে। এই পরিস্থিতিতে ইতালি সরকার সম্প্রতি ৩০ হাজার বাংলাদেশির কাজের অনুমতি বাতিল করেছে।

 

বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা বলেন, “ইতালি বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে শ্রমিক নিতে চায়। তবে অবৈধভাবে ইতালি প্রবেশের তালিকায় বাংলাদেশিরাই শীর্ষে, যা নিয়ে দেশটি উদ্বিগ্ন।”

 

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইতালি একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (SOP) স্বাক্ষর করেছে। এর লক্ষ্য—ভবিষ্যতে নিয়মিত ও সুরক্ষিত অভিবাসন নিশ্চিত করা।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশি নাগরিকেরা কীভাবে ইতালি যাচ্ছেন, সেখানে গিয়ে কী ধরনের সমস্যায় পড়ছেন—সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতে অবৈধ অভিবাসন বন্ধে আইন প্রণয়নের কথাও উঠেছে।”

 

এর আগে, গত মে মাসে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতিও পিয়ানতেদোসি ঢাকা সফর করেন। সফরে তিনি অবৈধ অভিবাসন ও বৈধ শ্রমিক নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন।

 

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও অবৈধ অভিবাসন রোধে সচেতনতা বাড়ানো, তথ্য যাচাইয়ের প্রক্রিয়া জোরদার এবং অভিবাসন আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

 

এই পরিস্থিতি দুই দেশের অভিবাসন নীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে মানবিকতা, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক বাস্তবতা একসঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।

সব খবর