ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন সময়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা নয়জন সচিবকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। সোমবার (২০ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, সরকারি চাকরি আইন ২০১৮–এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাদের ‘জনস্বার্থে অবসর’ দেওয়া হয়েছে।
অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন, মো. মশিউর রহমান এবং সচিব মো. সামসুল আরেফিন, মো. মিজানুর রহমান, মো. আজিজুর রহমান, মো. নূরুল আলম, ফরিদ উদ্দিন আহমদ, এ কে এম মতিউর রহমান ও শফিউল আজিম।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তারা বিদ্যমান বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সব সুবিধা পাবেন।
সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মচারী চাকরির ২৫ বছর পূর্ণ করলে সরকার ‘জনস্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে’ কোনো কারণ না দেখিয়েই তাকে অবসরে পাঠাতে পারে। এই ধারা অনুসারেই নয়জন সচিবের অবসরের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।
সিনিয়র সচিব মনজুর হোসেন ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক। মশিউর রহমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন, পরে তাঁকে ওএসডি করা হয়। মো. সামসুল আরেফিন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব ছিলেন এবং পরবর্তীতে ওএসডি হন।
মো. আজিজুর রহমান ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব; তারও আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (ডিজি-২) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মো. নূরুল আলম ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সেখান থেকে তাকেও ওএসডি করা হয়। ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ওএসডি হওয়ার আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সচিব ছিলেন।
এ কে এম মতিউর রহমান ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সচিব পদে পদোন্নতি পেলেও দুই দিনের মাথায় তাঁকে ওএসডি করা হয়। অন্যদিকে, শফিউল আজিম ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর তাঁকে ওএসডি করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবসরের এই প্রক্রিয়া আইনসিদ্ধ এবং এটি প্রশাসনিক সংস্কারের অংশ। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ ক্ষমতার পালাবদলের পর প্রশাসনে পুনর্গঠনের ইঙ্গিত বহন করছে।