সর্বশেষ

ভারতবিরোধী স্লোগানের সরকারই দ্বিগুণ দামে ভারতীয় কোম্পানিকে দিল মেট্রোরেলের কাজ

প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৫৪
ভারতবিরোধী স্লোগানের সরকারই দ্বিগুণ দামে ভারতীয় কোম্পানিকে দিল মেট্রোরেলের কাজ

ভারতবিরোধী স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় থাকা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল সম্প্রসারণ প্রকল্পের একটি বড় চুক্তি গেল ভারতীয় কোম্পানি লারসন অ্যান্ড টুব্রোর হাতে এবং তা প্রাথমিক বরাদ্দের প্রায় দ্বিগুণ মূল্যে।

 

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (আরডিপিপি) ‘ইলেকট্রোমেকানিক্যাল’ খাতে প্রাথমিকভাবে ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। কিন্তু দরপত্রের পর ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি একই কাজের জন্য দাবি করে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা। দীর্ঘ দর-কষাকষির পর অবশেষে ৪৬৫ কোটি টাকায় চুক্তি চূড়ান্ত হয়।

 

প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, এই অংশের অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), এবং তাদের চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের মাধ্যমেই কাজ করতে হয়। অর্থাৎ দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দেওয়ার নিয়মগত সুযোগ ছিল না।

 

সদ্য বিদায়ী প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়া বলেন, “২০২২ সালের ডলার মূল্যে কাজের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৭৪ কোটি টাকা। কিন্তু ডলারের দাম ও আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ব্যয়ও সমন্বয় করতে হয়েছে।”

 

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, “ঠিকাদার যা দাবি করেছিল, তার থেকে ৩০-৪০ শতাংশ কম দামে কাজ করানো সম্ভব হয়েছে।”

নতুন চুক্তির আওতায় কমলাপুর অংশে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, এসকালেটর, লিফট, সিসিটিভি, মনিটর ও সিগন্যাল টেলিকমিউনিকেশনসহ টেকনিক্যাল কাজ করবে লারসন অ্যান্ড টুব্রো।

 

তবে বরাদ্দের চেয়ে প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি মূল্যে কাজ দেওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, যে সরকার ভারতবিরোধিতার ওপর রাজনৈতিক অবস্থান দাঁড় করিয়ে ক্ষমতায় রয়েছে, সেই সরকারই এখন দ্বিগুণ দামে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে বড় প্রকল্পের কাজ দিচ্ছে কেন?

 

একজন মেট্রোরেল ব্যবহারকারী ফেসবুকে লিখেছেন, “যে সরকার ভারতীয় প্রভাবের সমালোচনা করে ক্ষমতা পোক্ত করেছে, তারাই এখন ভারতীয় কোম্পানিকে অতিরিক্ত দামে কাজ দিচ্ছে, এটা কি কেবল কাকতালীয়?”

 

অন্যদিকে, পূর্ববর্তী সরকারের সময় মেট্রোরেলের খরচ নিয়ে যেভাবে ‘অপচয়ের’ অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সেই প্রেক্ষাপটে এই ব্যয়বৃদ্ধি নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।

 

সমালোচকদের মতে, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত অবস্থান ও বাস্তব নীতির মধ্যে একটি স্পষ্ট বৈপরীত্য প্রকাশ পেয়েছে। যদিও সরকার ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে এটি কেবল ডলার মূল্য ও আমদানি খরচের প্রভাব; তবে জনমনে তৈরি হওয়া সংশয় তারা উড়িয়ে দিতে পারছে না।

সব খবর

আরও পড়ুন

পছন্দের সরকারই দিল অপ্রস্তুত করে দেয়া রায়, অস্বস্তিতে বিএনপি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরল, কিন্তু কার্যকর ৬ বছর পর পছন্দের সরকারই দিল অপ্রস্তুত করে দেয়া রায়, অস্বস্তিতে বিএনপি

লালদিয়া ও পানগাঁও টার্মিনালের তড়িঘড়ি বিদেশি চুক্তি নিয়ে তীব্র বিতর্ক

অবশেষে বিদেশিদের হাতে জাতীয় সম্পদ লালদিয়া ও পানগাঁও টার্মিনালের তড়িঘড়ি বিদেশি চুক্তি নিয়ে তীব্র বিতর্ক

অন্তর্বর্তী সরকারের সীমাবদ্ধ ম্যান্ডেটকে ছাড়িয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী অবকাঠামোর নীতিগত অনুমোদন

জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে নতুন বিতর্ক অন্তর্বর্তী সরকারের সীমাবদ্ধ ম্যান্ডেটকে ছাড়িয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী অবকাঠামোর নীতিগত অনুমোদন

পুলিশকে ‘দেখামাত্র গুলি’ নির্দেশে মানবাধিকারকর্মীদের তীব্র সমালোচনা

পুলিশকে ‘দেখামাত্র গুলি’ নির্দেশে মানবাধিকারকর্মীদের তীব্র সমালোচনা

বাংলাদেশি পাসপোর্ট হয়েছে আরও দুর্বল, বাড়িয়েছে ভিসা জটিলতা

নেপথ্যে ৫ আগস্ট বাংলাদেশি পাসপোর্ট হয়েছে আরও দুর্বল, বাড়িয়েছে ভিসা জটিলতা

নভেম্বরেও ডেঙ্গুর আগ্রাসী প্রকোপ

মশক নিধনে ব্যর্থতা নভেম্বরেও ডেঙ্গুর আগ্রাসী প্রকোপ

রাষ্ট্রদূত নিয়োগ নাকি ইউনূস ঘনিষ্টদের নিরাপদে দেশত্যাগের বন্দোবস্ত?

কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনা রাষ্ট্রদূত নিয়োগ নাকি ইউনূস ঘনিষ্টদের নিরাপদে দেশত্যাগের বন্দোবস্ত?

বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের আহ্বান

ব্রিটিশ এমপি ব্ল্যাকম্যানের বিবৃতি বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের আহ্বান