বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আজ একবেলা খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে। শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্র চালের বাজারে অস্থিরতা। তিন মাস ধরে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী। অথচ আশেপাশের দেশ ও বিশ্ববাজারে চালের দাম কম। এই বিপরীত চিত্রের মূল কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা এবং বাজারে সিন্ডিকেটের চাঁদাবাজি।
ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে কৃষককে তা বিক্রি করতে হয়। ঋণ শোধ, নতুন মৌসুমের খরচ সব মিলিয়ে তাদের হাতে ধান রাখার সামর্থ্য নেই। এ সুযোগে বড় মিলার ও করপোরেট গোষ্ঠী কম দামে ধান কিনে মজুত করে রাখে। পরে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজারে দাম বাড়িয়ে দেয়। এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হয়, আর সিন্ডিকেট ও সরকারের দোসররা অঢেল মুনাফা লুটে নেয়।
সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে কেজি প্রতি চালের দাম বেড়েছে ২৫ টাকা। এটি বাজারের স্বাভাবিক ওঠানামা নয়, বরং সুপরিকল্পিত কারসাজি। যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে, তারাই সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় আমদানির লাইসেন্স পাচ্ছে। অর্থাৎ সরকার জনগণের পক্ষে নয়, বরং সিন্ডিকেটের পক্ষে কাজ করছে।
সরকারি তদারকি আজ শুধু নাটকীয়তা। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দাবি করেন, বাজারে নতুন করে দাম বাড়ছে না। অথচ বাস্তবে বাজার আগুনে ঝলসে উঠছে। এই অস্বীকারই প্রমাণ করে তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে নয়, বরং চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটকে রক্ষা করতে ব্যস্ত।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা দায় এড়াতে ব্যস্ত, কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রশ্ন একটাই কেন নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না সরকার? জনগণ কি শুধু কর দিবে আর বাজারে সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হবে?
চালের বাজারে এই আগুন শুধু অর্থনৈতিক নয়, এটি মানবিক বিপর্যয়ও।