সর্বশেষ

কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনা

রাষ্ট্রদূত নিয়োগ নাকি ইউনূস ঘনিষ্টদের নিরাপদে দেশত্যাগের বন্দোবস্ত?

কূটনীতি ডেস্ক বিডি ভয়েস
প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩০
রাষ্ট্রদূত নিয়োগ নাকি ইউনূস ঘনিষ্টদের নিরাপদে দেশত্যাগের বন্দোবস্ত?

বাংলাদেশের কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে কয়েকজন অপ্রচলিত প্রার্থীর রাষ্ট্রদূত হওয়ার দৌড়। এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তাকে ডেনমার্কে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিতে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই কোপেনহেগেনের কাছে সম্মতি চেয়ে চিঠি (এগ্রিমো) পাঠানো হয়েছে। এখন অপেক্ষা কেবল গ্রিন সিগন্যালের। দৈনিক মানব জমিন এ বিষয়ে একটি  প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

 

ডেনমার্কে নিয়াজ আহমেদ খান:
 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এগ্রিমো পেতে ১ থেকে ৩ মাস সময় লাগতে পারে।  

 

লুৎফে ও হুসনা সিদ্দিকী:
 

প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং তার বোন হুসনা সিদ্দিকীকেও রাষ্ট্রদূত করার প্রস্তাব উঠেছে। তাদের পিতা এওয়াইবিআই সিদ্দিকী শেখ হাসিনার আমলে পুলিশের আইজি ছিলেন। লুৎফে বর্তমানে উপদেষ্টা পদমর্যাদার বেতন-ভাতা ও সুবিধা ভোগ করছেন। তার পছন্দ সিঙ্গাপুর। অন্যদিকে হুসনা সিদ্দিকী কেপিএমজি ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নেদারল্যান্ডসে কর্মরত। তিনি চান নেদারল্যান্ডসেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হতে। একই পরিবারের দুই সদস্যকে রাষ্ট্রদূত করার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কূটনৈতিক মহলে।  

 

লামিয়া মোর্শেদ:  
 

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদও রাষ্ট্রদূত হওয়ার দৌড়ে আছেন। তিনি ইউনূস সেন্টারের সাবেক নির্বাহী পরিচালক। তার পছন্দ ইউরোপীয় কোনো দেশ। যদিও সেখানে বর্তমানে কোনো শূন্য পদ নেই। তবে তার প্রভাব ও যোগাযোগের কারণে সরকার চাইলে ইউরোপ থেকে কাউকে সরিয়ে এনে হলেও তাকে পাঠাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

 

এই নিয়োগ প্রস্তাবগুলোকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে আখ্যা দিয়েছে সেগুনবাগিচার কূটনৈতিক মহল। বলা হচ্ছে, প্রস্তাবিতদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন নেই—তাদের রয়েছে দেশি-বিদেশি ডিগ্রি, বড় চাকরি, উচ্চ বেতন, সামাজিক ব্যবসায় সফলতা। কিন্তু এতদিন ধরে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। এখন রাষ্ট্রদূত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পেশাদার কূটনীতিকরা।

 

কূটনীতির মতো বিশেষায়িত ক্ষেত্রে বাইরের নিয়োগের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা রয়েছে। সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেকে সেই কোটায় আসেন। কিন্তু বিদ্যমান রেশিওতে নতুন করে বাইরের নিয়োগের সুযোগ সীমিত। পেশাদার কূটনীতিকদের দাবি, এ ধরনের নিয়োগ বৈষম্য আরও বাড়াবে।  

 

এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, “প্রস্তাবিতরা সবাই মাখন খাওয়া। এতদিন গাছেরটা খেয়েছেন, এখন তলারটা কুড়াচ্ছেন। তাদের জীবনকে আরও বর্ণিল করার জন্যই কি এত রক্ত ঝরেছিল?”  

 

কোপেনহেগেন ছাড়াও সিঙ্গাপুর, দ্য হেগ, থিম্পু, ইয়াঙ্গুন এবং তেহরানসহ কয়েকটি স্থানে রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারের পদ শূন্য রয়েছে বা শিগগির শূন্য হবে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব স্টেশনে রাষ্ট্রদূত পাঠানোর বিষয়ে মৌখিক আলোচনা হলেও কোনো ফাইলওয়ার্ক এখনো শুরু হয়নি।  

 

ড. নিয়াজ আহমেদ খান, লুৎফে ও হুসনা সিদ্দিকী এবং লামিয়া মোর্শেদ—এই চারজনকে রাষ্ট্রদূত করার প্রস্তাব অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক নিয়োগে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পেশাদার কূটনীতিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, কোপেনহেগেনসহ অন্যান্য স্টেশনে শেষ পর্যন্ত কারা রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান।

সব খবর

আরও পড়ুন

পছন্দের সরকারই দিল অপ্রস্তুত করে দেয়া রায়, অস্বস্তিতে বিএনপি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরল, কিন্তু কার্যকর ৬ বছর পর পছন্দের সরকারই দিল অপ্রস্তুত করে দেয়া রায়, অস্বস্তিতে বিএনপি

লালদিয়া ও পানগাঁও টার্মিনালের তড়িঘড়ি বিদেশি চুক্তি নিয়ে তীব্র বিতর্ক

অবশেষে বিদেশিদের হাতে জাতীয় সম্পদ লালদিয়া ও পানগাঁও টার্মিনালের তড়িঘড়ি বিদেশি চুক্তি নিয়ে তীব্র বিতর্ক

অন্তর্বর্তী সরকারের সীমাবদ্ধ ম্যান্ডেটকে ছাড়িয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী অবকাঠামোর নীতিগত অনুমোদন

জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে নতুন বিতর্ক অন্তর্বর্তী সরকারের সীমাবদ্ধ ম্যান্ডেটকে ছাড়িয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী অবকাঠামোর নীতিগত অনুমোদন

পুলিশকে ‘দেখামাত্র গুলি’ নির্দেশে মানবাধিকারকর্মীদের তীব্র সমালোচনা

পুলিশকে ‘দেখামাত্র গুলি’ নির্দেশে মানবাধিকারকর্মীদের তীব্র সমালোচনা

বাংলাদেশি পাসপোর্ট হয়েছে আরও দুর্বল, বাড়িয়েছে ভিসা জটিলতা

নেপথ্যে ৫ আগস্ট বাংলাদেশি পাসপোর্ট হয়েছে আরও দুর্বল, বাড়িয়েছে ভিসা জটিলতা

নভেম্বরেও ডেঙ্গুর আগ্রাসী প্রকোপ

মশক নিধনে ব্যর্থতা নভেম্বরেও ডেঙ্গুর আগ্রাসী প্রকোপ

বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের আহ্বান

ব্রিটিশ এমপি ব্ল্যাকম্যানের বিবৃতি বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের আহ্বান

সুইস কোম্পানী পাচ্ছে পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনালের দায়িত্ব

বিদেশিদের হাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুইস কোম্পানী পাচ্ছে পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনালের দায়িত্ব