সর্বশেষ

আত্মশুদ্ধি ও সত্যকে বরণের উৎসব

শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ

প্রকাশিত: ৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:২৫
শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ

আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান পালিত হচ্ছে। এটি আশ্বিনী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের উদ্যোগে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষু সংঘের প্রাতরাশ, মঙ্গলসূত্র পাঠ, বুদ্ধপূজা, পঞ্চশীল ও অষ্টাঙ্গ উপসথ শীল গ্রহণ, মহাসংসদান, অতিথি আপ্যায়ন, পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পাঠ, আলোচনা সভা, প্রদীপ পূজা, আলোকসজ্জা, বিশ্বশান্তি কামনায় সম্মিলিত বুদ্ধোপাসনা, ফানুস উড্ডয়ন ও বুদ্ধকীর্তন।

 

চন্দ্রপঞ্জিকা অনুযায়ী, সোমবার রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে পূর্ণিমা তিথি শুরু হয়ে মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৩ মিনিটে শেষ হবে। প্রতিবছর আশ্বিন মাসে প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে এক মাসব্যাপী দেশের প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে শুরু হয় কঠিন চীবর দান উৎসব, যা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় আয়োজন।

 

বৌদ্ধদের মতে, প্রবারণা পূর্ণিমার এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ তাবতিংস স্বর্গে মাতৃদেবীকে অভিধর্ম দেশনার পর ভারতের সাংকাশ্য নগরে অবতরণ করেন। মানবজাতির শান্তি ও কল্যাণে ভিক্ষু সংঘকে দিকে দিকে ধর্ম প্রচারের নির্দেশ দেন তিনি। একই দিনে তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাসেরও সমাপ্তি ঘটে। তাই ভিক্ষু সংঘের বর্ষাব্রত শেষে আসে প্রবারণার এই পবিত্র দিন, যা আত্মশুদ্ধি অর্জন ও অশুভ বর্জনের প্রতীক।

 

বৌদ্ধ ধর্মীয় লেখক সুদর্শন বড়ুয়া জানান, আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস ভিক্ষু সংঘ বর্ষাবাস পালন করেন। এরপর প্রবারণা উৎসবে আত্মসমর্পণ, আত্মশুদ্ধি ও বিনয় শিক্ষার মাধ্যমে ভিক্ষুদের আধ্যাত্মিক যাত্রার নতুন অধ্যায় শুরু হয়।

 

প্রবারণা পূর্ণিমা তাই শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়; এটি আধ্যাত্মিক উন্নয়ন, সত্য ও সুন্দরকে বরণের মহোৎসব, যা মানবতার মঙ্গল সাধনের অঙ্গীকার বহন করে।

সব খবর