ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলা আয়োজন নিয়ে সরকারের বিভ্রান্তিকর অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন লেখক, প্রকাশক ও সংস্কৃতিকর্মীরা। তারা বলছেন, একুশের বইমেলা কেবল বই বিক্রির অনুষ্ঠান নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ভাষা আন্দোলন ও গণতন্ত্রের চেতনার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত একটি সাংস্কৃতিক উৎসব।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘ফেব্রুয়ারিতেই বইমেলা চাই’ স্লোগান নিয়ে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে উপস্থিতরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। কয়েকজন আন্দোলনকারীকে পরে পুলিশের গাড়িতে করে যমুনায় নেওয়া হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অমর একুশে গ্রন্থমেলা দেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল উৎসব। এটি ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জাতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বক্তারা বলেন, প্রয়োজন হলে নির্বাচনের আগে বা পরে কয়েক দিন মেলা স্থগিত রাখা যেতে পারে, তবে ফেব্রুয়ারিতেই বইমেলা আয়োজন করতে হবে।
বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, বইমেলার স্টল ভাড়া অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা প্রকাশকদের অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করছে। তারা বলেন, ‘স্টলভাড়া বৃদ্ধি এবং আয়োজন সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা একুশের বইমেলাকে নস্যাৎ করার একটি অপচেষ্টা।’
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘আমরা জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলাম। এখন চাই না, বইমেলা ইস্যুতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হোক যাতে পতিত আওয়ামী শক্তি পুনর্বাসনের সুযোগ পায়।’
লেখক ও প্রকাশকরা সরকারের কাছে দাবি জানান, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা শুরু করতে হবে এবং স্টল ভাড়া ৫০ শতাংশ কমানো হোক। তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকার এই সাংস্কৃতিক উৎসবকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেবে এবং বছরের অন্যতম বড় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রূপে বইমেলাকে নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা সম্ভব হবে।