বাংলাদেশিদের জন্য বিভিন্ন দেশে ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে, এমন পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, “আগে আমাদের নিজেদের ঘর ঠিক করতে হবে, তাহলে এ সমস্যা থাকবে না।” বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভিসা প্রত্যাখ্যান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এর জন্য বাংলাদেশিদেরই দায়ী করেন।
তিনি বলেন, “আমরা ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করি, অনিয়মিত অভিবাসনের হার বেশি। ফলে আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে ভিসা নীতিতে।” তিনি আরও জানান, জার্মানিতে পড়তে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আবেদন সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে, অথচ দেশটির দূতাবাস বছরে মাত্র ২ হাজার আবেদন প্রক্রিয়াকরণে সক্ষম। পাকিস্তান থেকে প্রতিবছর ৯ হাজার শিক্ষার্থী নেয় জার্মানি, বাংলাদেশও সে অনুরোধ জানিয়েছে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, যেসব দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে নেই, সেসব দেশের ভিসা পেতে জটিলতা বেড়েছে। দিল্লিতে অবস্থিত দূতাবাসগুলোতে আবেদন করতে গিয়ে বাংলাদেশিরা সমস্যায় পড়ছেন। ভারতের ভিসা পাওয়া কঠিন হওয়ায় বিকল্প পথ খোঁজা হচ্ছে। যেমন, একবার সার্বিয়ার ভিসা ভিয়েতনাম থেকে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এমন বিকল্প ব্যবস্থার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, “ভিসা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দেশের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। আপনি কাউকে বাধ্য করতে পারেন না যে, তারা কেন আপনাকে ভিসা দিল না।” ভিয়েতনামের ভিসা না পাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সবখানেই ভিসা নিয়ে কথা হয়, কিন্তু সিদ্ধান্ত তাদের।”
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর প্রসঙ্গ উঠলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এসব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে না। বিচ্ছিন্নভাবে কেউ জড়িয়ে পড়লে তা দুঃখজনক, তবে সরকারের কোনো সমর্থন নেই।” তিনি আফগানিস্তান, পাকিস্তান বা অন্য কোনো দেশের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করা বাংলাদেশিদের কর্মকাণ্ডকে সরকারের নীতির বাইরে বলে উল্লেখ করেন।
সবশেষে তিনি বলেন, “আমরা চাই না কেউ এ ধরনের কার্যক্রমে জড়িত হোক। আমাদের সুনাম রক্ষা করতে হলে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও আন্তর্জাতিক আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে।”