আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৬। বাংলা একাডেমির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ওই দিন সকাল ১১টায় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে এবং মেলা চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলা একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে আয়োজিত এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ, বাংলা একাডেমির পরিচালকবৃন্দ, প্রকাশক প্রতিনিধি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এবারের বইমেলা আয়োজন নিয়ে বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের কারণে নির্ধারিত সময়ে মেলা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় ২০২৬ সালের অমর একুশে বইমেলা পিছিয়ে ফেব্রুয়ারিতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর আগে চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বইমেলা আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হলেও, পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।
লেখক, প্রকাশক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ফেব্রুয়ারি মাসেই বইমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। তবে এবারের আয়োজন পুরোপুরি পবিত্র রমজান মাসে পড়ায় প্রকাশক সমাজের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
প্রকাশকদের আশঙ্কা, রমজান মাসে ইফতার, তারাবির নামাজ ও ধর্মীয় অনুশীলনের কারণে সন্ধ্যা ও রাতের সময় দর্শনার্থী কমে যেতে পারে, যা বই বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি প্রকাশকদের জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে, কারণ বইমেলার বিক্রির ওপরই তাদের বছরের বড় অংশের আর্থিক হিসাব নির্ভর করে।
প্রকাশকরা বলছেন, অমর একুশে বইমেলা শুধু একটি আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয়; এটি ভাষা, সাহিত্য ও প্রকাশনা শিল্পের সবচেয়ে বড় উৎসব। তাই সময়সূচি নির্ধারণে ধর্মীয় বাস্তবতা, পাঠক অভ্যাস ও বাজার পরিস্থিতি আরও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। অন্যথায় রমজানজুড়ে বইমেলা আয়োজন কাঙ্ক্ষিত সুফল না এনে আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থাকার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।