বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি রাজনৈতিক দলের (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রভাবশালী সদস্যরা। প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির র্যাংকিং মেম্বার গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সাবকমিটির চেয়ারম্যান বিল হুইজেঙ্গা ও র্যাংকিং মেম্বার সিডনি কামলেগার-ডোভ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে সহস্বাক্ষর করেছেন কংগ্রেস সদস্য জুলি জনসন ও টম সুয়োজি।
২৩ ডিসেম্বর তারিখে পাঠানো চিঠিতে কংগ্রেস সদস্যরা বলেন, “বাংলাদেশে জাতীয় সংকটের মুহূর্তে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দায়িত্ব গ্রহণে আপনার এগিয়ে আসাকে আমরা স্বাগত জানাই। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে এবং ব্যালটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে বাংলাদেশের জনগণের মতামত প্রতিফলনের পরিবেশ তৈরি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য রাজনৈতিক মতাদর্শের সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত জরুরি।”
চিঠিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ। তবে সরকার যদি রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে অথবা ত্রুটিপূর্ণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনরায় চালু করে, তাহলে এসব লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না বলে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
কংগ্রেস সদস্যরা চিঠিতে জোর দিয়ে বলেন, সংগঠনের স্বাধীনতা এবং সম্মিলিত দায়ের পরিবর্তে ব্যক্তিগত ফৌজদারি দায়বদ্ধতার নীতি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তাদের মতে, আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেসব ব্যক্তি অপরাধ বা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণিত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে কোনও রাজনৈতিক দলের সব কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত এসব মৌলিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
চিঠির শেষে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার যেন এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই বাংলাদেশি জনগণের মতামত প্রতিফলিত হওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে এবং দেশটির গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে।