ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো দায় নিচ্ছেন না বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক। তার দাবি, ভবনটি বেবিচকের হলেও এর কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে বিমান বাংলাদেশ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার বেবিচক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “কার্গো কমপ্লেক্সের আগুন লাগার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই আমাদের ফায়ার ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু গুদামের সামনে মালপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় ফায়ার ইউনিটের গাড়িগুলো আগুনের কাছে যেতে পারেনি।”
তিনি আরও জানান, আগুনের সূত্রপাত হয় কুরিয়ার শাখা থেকে, যার অবকাঠামো ছিল খোপ খোপ এবং শক্ত। ফলে প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় ফায়ার ইউনিট, পরে তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো কমপ্লেক্সে।
মালামাল সরানোর দায়িত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে আছে বিমান, আর মালামাল ক্লিয়ার করার দায়িত্ব সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের। কাস্টমসও রয়েছে, সবকিছু ম্যানেজ করার দায়িত্ব তাদের।”
চেয়ারম্যান জানান, নিয়ম অনুযায়ী ২১ দিনের মধ্যে মালামাল সরিয়ে ফেলার কথা থাকলেও বাস্তবে বছরের পর বছর তা জমে থাকে, যা অগ্নি নির্বাপণ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করেছে।
তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে দায়ী করতে চান না তিনি। “আমি কারো দিকে আঙুল তুলতে চাই না,” বলেন মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক।
বেবিচক নিজে কোনো দায় নিচ্ছে কি না এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমাদের দায়িত্ব শুধু অবকাঠামো। কার্যক্রম পরিচালনা করে অন্য সংস্থাগুলো। আমরা ১৪০টি ফায়ার এক্সটিংগুইশার স্থাপন করেছি এবং আইকাও নিয়ম অনুযায়ী নিয়মিত মহড়া চালিয়ে যাচ্ছি।”
গত শনিবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে কুরিয়ার শাখায় আগুন লাগে, যা রাত ৯টায় নিয়ন্ত্রণে আসে এবং পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয় রোববার বিকালে ২৭ ঘণ্টা পর। এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) জানিয়েছে, এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তারা ২টা ৩০ মিনিটে ঘটনার খবর পেয়েছে। সময়ের এই পার্থক্য প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, “আমাকে চেক করতে হবে।”
এই অগ্নিকাণ্ডে বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক মান কমবে কি না এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় না কমবে। দেখার বিষয়, আমরা এরপর কী পদক্ষেপ নিয়েছি।”