ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের উদ্যোগকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। দলটির দাবি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব সীমিত নির্বাহী কার্য পরিচালনার মধ্যে আবদ্ধ, এর বাইরে গিয়ে গণভোট আয়োজনের মতো নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সাংবিধানিক এখতিয়ার তাদের নেই।
গত বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদের কাছে দেওয়া এক লিখিত চিঠিতে এসব আপত্তির কথা জানায় জাসদ। দলের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত রায়হান ও ওবায়দুর রহমান চুন্নুর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চিঠিটি হস্তান্তর করে।
চিঠিতে জাসদ অভিযোগ করে, সম্প্রতি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির মতবিনিময় হলেও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির মতো গুরুত্বপূর্ণ দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অথচ ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত চারটি জাতীয় নির্বাচনে এসব দল উল্লেখযোগ্য ভোট অর্জন করেছিল।
জাসদ আরও বলেছে, আপিল বিভাগের মতামত অনুযায়ী বর্তমান সরকার একটি ‘অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাহী ব্যবস্থা’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। ফলে সংবিধানের ৯৪(১)(খ) ও ১৪২(ক)(আ) অনুচ্ছেদের আলোকে সংবিধান সংশোধন বা সে উদ্দেশ্যে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া কিংবা এ-সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের উদ্যোগে যুক্ত হওয়া সমীচীন নয় বলেও উল্লেখ করেছে দলটি।
চিঠিতে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দেওয়া রায় বাতিলের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি বলা হয়, জাসদসহ কয়েকটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কার্যালয় বর্তমানে ‘মব সন্ত্রাসী’দের দখলে রয়েছে। এসব কার্যালয় দখলমুক্ত করা এবং রাজনৈতিক নেতাদের মামলা প্রত্যাহার না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি সম্ভব নয়।
এ ছাড়া সংবিধান অনুযায়ী রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ উল্লেখ করে জাসদ দাবি করেছে, ধর্মভিত্তিক ও সাম্প্রদায়িক দলগুলোর নিবন্ধন ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকা সংবিধানবিরোধী। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক নির্দেশনা মানছে না বলেও দলটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।