কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও ধানমন্ডিতে ৩টি স্থানে বড় মিছিল করেছেন। পুলিশ বলছে, এসব ঘটনায় ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
জুমার নামাজ শেষে বেলা পৌনে ২টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের নাবিস্কো মোড় থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে মিছিল বের হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “হঠাৎ দেখি হাজার হাজার লোকজন শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনা, স্লোগান দিয়ে, জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে তিব্বতের দিকে আসতেছে। দুপুর ২টার দিকে হাজার দুয়েক লোকজন নিয়ে আওয়ামী লীগ মিছিল করেছে।”
মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা স্লোগান দেন— “শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশে হাসবে”, “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু”, “হটাও ইউনূস, বাঁচাও দেশ।”
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন বলেন, “জুমার নামাজ শেষ হওয়ামাত্রই কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা নাবিস্কো মোড়ে ঝটিকা মিছিল বের করেন। এ সময় তাঁরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাতজনকে আটক করে। এ সময় অন্যরা পালিয়ে যান।”
তিনি আরও বলেন, “সকালে জিএমজি মোড় থেকে কিছু লোকজন বের হয়েছিল, আমরা মিছিল করতে দিই নাই। তখন তেজগাঁও কলেজের ছাত্রলীগের নিয়ামুল হাসান নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। আর দুপুরে আওয়ামী লীগের লোকজন নাবিস্কো থেকে আবারও বের হয়েছে, আমরা তাদের ধরতেছি।”
এদিকে ধানমন্ডি ৪/এ সড়কেও আওয়ামী লীগের শত শত নেতা–কর্মী মিছিল করেন। তাঁরা শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগান দেন। ধানমন্ডি অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বলেন, “জুমার নামাজ চলার সময় ৩/এ নম্বরের একটি মসজিদ থেকে বেরিয়ে যুবকেরা আওয়ামী লীগের পক্ষে মিছিল বের করেন। মিছিলের খবর পেয়ে পাশের ৩/এ নম্বর সড়কে মোতায়েন করা পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সেখানে ছুটে যান। পুলিশ সদস্যরা পেছন থেকে ধাওয়া করে মিছিলকারীদের আটকের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁরা দৌড়ে পালিয়ে যান।”
ধানমন্ডি থানার ওসি ক্যশৈন্যু মারমা বলেন, “অনেকে আমাকে মিছিলের ছবি পাঠিয়েছে।”
মিছিলে থাকা একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “ঘরে বসে থাকলেও বাঁচার সুযোগ নাই, তাইলে আর ঘরে থেকে লাভ কী। এই জন্য মিছিলের নির্দেশ পেয়ে লোকজন নিয়ে নেমে পড়ছি। আজকে উত্তর আওয়ামী লীগের মিছিলে বহু লোক হয়েছে। এই অবৈধ সরকার কাউকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এর প্রতিবাদে আমরা মিছিল করেছি।”
রাজধানীতে আকস্মিক এই মিছিলের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, অনুমতি ছাড়া সমাবেশ বা মিছিল করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রাজপথে আওয়ামী লীগের আকস্মিক উপস্থিতি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তার আগে ৩১ অগাস্ট ধানমন্ডির ২৭ নম্বর রোডে রাপা প্লাজা সংলগ্ন রাস্তা থেকে শংকরের বাংলাদেশ আই হসপিটালের সামনের সড়ক পর্যন্ত মিছিল করতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। এর সপ্তাহখানেক আগেও গুলিস্তানের বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মীকে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।