গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের ওপর হামলার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় সহিংসতা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, ময়মনসিংহ, এবং রাজশাহীতে জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে।
৩০ আগস্ট, শনিবার, টাঙ্গাইল শহরে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা জেলা জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা চালান। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল টাঙ্গাইল সদর থানার পাশে অবস্থিত জাতীয় পার্টির অফিসে পৌঁছালে নেতাকর্মীরা অফিসের সাইনবোর্ড, চেয়ার ও অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। এরপর তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বেলা ১টার দিকে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন, গত শুক্রবার নুরুল হক নূরের ওপর হামলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নৃশংসতার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
একই দিন, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর হয়। হামলাকারীরা কার্যালয়ের চেয়ার, টেবিল, ফ্যান এবং আলমিরা ভাঙচুর করে এবং আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনায় জাতীয় পার্টির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জেও হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা স্থানীয় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা চালান এবং সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজশাহীতে, রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট থেকে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি গণপাড়া মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এখানে কিছু নেতাকর্মী জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে দরজা ও অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং সেগুলি বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেন।
এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাগুলোর পর জাতীয় পার্টি এবং গণঅধিকার পরিষদ একে অপরকে দোষারোপ করছে। জাতীয় পার্টির নেতারা এই হামলাগুলিকে 'পরিকল্পিত' বলে মন্তব্য করেছেন এবং দাবি করেছেন, এই ধরনের সহিংসতা স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার পথে বড় প্রতিবন্ধকতা। অন্যদিকে, গণঅধিকার পরিষদ নেতারা তাদের আন্দোলনের জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে 'ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ' বলে তুলে ধরছেন।
পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছে, তবে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় শঙ্কা রয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ার। এই পরিস্থিতিতে সব পক্ষের নেতারা শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আলোচনা ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।