সর্বশেষ

১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউন’

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঠেকাতে সরকারের কঠোর নজরদারি

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৩:২২
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঠেকাতে সরকারের কঠোর নজরদারি

আগামী ১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ কর্মসূচি দাবী করে দলটি জানায় ভোটাধিকার, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, নাগরিক নিরাপত্তা ও নাগরিক স্বাধীনতার দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই কর্মসূচিকে সামনে রেখে রাজধানীতে যে নিরাপত্তা ও নজরদারির নামে অভিযান চলছে, তা অনেকের কাছেই রাজনৈতিক দম-পীড়ন ছাড়া আর কিছু নয়। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যেকোনো নাশকতা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বলছে, এই কঠোরতার আসল উদ্দেশ্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই ঠেকানো।

 

রাজধানীতে গত তিন দিন ধরে ডিএমপি, র‍্যাব, বিজিবি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। শহরের প্রবেশমুখে ব্যারিকেড, বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি, চেকপোস্ট, মোটরসাইকেল ও গাড়িতে তল্লাশি মিলিয়ে সাধারণ মানুষও ভোগান্তিতে পড়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকার ভয়, আতঙ্ক ও নজরদারির পরিবেশ তৈরি করে রাজপথে গণজমায়েত ঠেকাতে চাইছে।

 

এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৩ নভেম্বরের ‘ঢাকা লকডাউন’ কোনো সহিংস কর্মসূচি নয়। এটি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, যেখানে দলের নেতা-কর্মী ছাড়াও সাধারণ নাগরিক ও পেশাজীবীরাও অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু মাঠের পরিস্থিতি বলছে ভিন্ন কথা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযোগ উঠেছে, কোনো অভিযোগপত্র ছাড়াই হঠাৎ গ্রেফতার, বাসা ও অফিসে অভিযান, এবং হুমকি-ধমকি।

 

মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, ধানমন্ডি ও মিরপুর এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ বা আগুনের ঘটনার অজুহাতে পুলিশ অভিযান আরও কঠোর করেছে। আওয়ামী লীগ বলছে, এসব ঘটনার অনেকটাই ‘ম্যানুফ্যাকচারড’, দমনমূলক ব্যবস্থা বৈধতা দিতে এমন নাটক সাজানো হচ্ছে।

 

রাজধানীতে গ্যাস বেলুন ও পোস্টার দিয়ে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে এনে একাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে ডিবি। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এটি আদর্শ উদাহরণ যে, সাধারণ প্রচারণাকেও অপরাধ হিসেবে দেখাচ্ছে সরকার।

 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এটি সাধারণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, সরকারের উদ্দেশ্য স্পষ্ট: রাজধানীতে ভয় ও আতঙ্ক তৈরি করে মানুষকে ঘরে রাখা, যাতে কেউ রাজপথে না নামতে পারে।

 

আওয়ামী লীগ মনে করছে, একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ কর্মসূচি ঠেকানোর জন্য সরকার নিরাপত্তার নামে নাগরিক অধিকার সংকুচিত করছে। গ্রেফতার, হয়রানি, নজরদারি এবং আতঙ্ক এমন চিত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কাম্য নয়।

 

১৩ নভেম্বরের আগে দিন যতই এগোচ্ছে, রাজপথে দমনের মাত্রা ততই বাড়ছে এমন অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতাদের। তারা বলছেন, গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নিতে সরকার মরিয়া; আর তাই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদও সহ্য করতে পারছে না।

সব খবর

আরও পড়ুন

দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের সর্বাত্মক শাটডাউনে অচল জনজীবন

ক্যাঙ্গারু কোর্টের রায়ে জনরোষ দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের সর্বাত্মক শাটডাউনে অচল জনজীবন

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণহীন ও হাস্যকর

আইনজ্ঞদের বিশ্লেষণ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণহীন ও হাস্যকর

রায় প্রত্যাখ্যান করে দেশব্যাপী মঙ্গলবার সকাল–সন্ধ্যা শাটডাউনের ডাক

শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া রায় প্রত্যাখ্যান করে দেশব্যাপী মঙ্গলবার সকাল–সন্ধ্যা শাটডাউনের ডাক

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়কে ‘প্রহসনমূলক’ অভিহিত করে প্রত্যাখ্যান

১০০১ প্রগতিশীল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বিবৃতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়কে ‘প্রহসনমূলক’ অভিহিত করে প্রত্যাখ্যান

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফরমায়েশি ফাঁসির রায় ঘোষণা

শেখ হাসিনার বিচারের নামে প্রহসন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফরমায়েশি ফাঁসির রায় ঘোষণা

“আল্লাহ জীবন দিয়েছেন, আল্লাহই নেবেন, রায় নিয়ে পরোয়া করি না!”

রায়ের আগে শেখ হাসিনার আত্মবিশ্বাসী অডিওবার্তা “আল্লাহ জীবন দিয়েছেন, আল্লাহই নেবেন, রায় নিয়ে পরোয়া করি না!”

আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলে সহিংসতার আশঙ্কা

রায়ের আগেই জয়ের সতর্কবার্তা আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলে সহিংসতার আশঙ্কা

চট্টগ্রামে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা আন্দোলনে; মাগুরায় সড়ক অবরোধ

বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল চট্টগ্রামে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা আন্দোলনে; মাগুরায় সড়ক অবরোধ