বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে বিপুল সংখ্যক মুসলমান, মসজিদ–মাদ্রাসা, আলেম–ওলামা ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও কেন অন্যায়, দুর্নীতি, চুরি ও অর্থপাচারের মতো অনিয়ম বেড়ে চলছে এ প্রশ্ন এখন জাতির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষার কেয়ারটেকারদের আলোচনা সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটি মসজিদ নির্মাণে মানুষ যেভাবে উৎসাহ দেখায়, সেই আগ্রহ নৈতিক ও ভালো মানুষ তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হয় না। নৈতিকতার চর্চা না থাকলে সমাজে ধর্মীয় মূল্যবোধ কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, দেশে এখন জরুরি ভিত্তিতে ধর্ম, নৈতিকতা ও সুশাসন নিয়ে গভীর আলোচনা এবং কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।
ইন্দোনেশিয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ফখরুল বলেন, সেখানে সরকার যেই হোক না কেন, কমিউনিস্ট বা ইসলামী, শক্তিশালী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ‘গণতান্ত্রিক অ্যাসোসিয়েশন অব উলামা’–কে বাদ দিয়ে কোনো জাতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে এমন গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর ধর্মীয় প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো অনুপস্থিত।
বিএনপিকে ‘উদারপন্থী গণতান্ত্রিক দল’ উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, গণতন্ত্র না থাকলে ধর্মীয় স্বাধীনতা বা কোনো সম্প্রদায়ের অধিকারই নিরাপদ থাকে না। গত ১৫–১৬ বছরে বর্তমান সরকারের অধীনে মানুষের ভোটাধিকার থেকে শুরু করে ধর্ম পালনের অধিকার পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
ফখরুল বলেন, নৈতিক শিক্ষা শক্তিশালী করতে পারলে হত্যা, অপরাধ, রাহাজানি ও অবক্ষয় অনেক কমে আসত। স্কুল, মাদ্রাসা, পরিবার ও শিক্ষক—এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করাই হওয়া উচিত রাষ্ট্রের অগ্রাধিকার। তিনি আরও জানান, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ইসলামী ফাউন্ডেশনকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে পুনর্গঠন করা হবে এবং তা রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
সভায় তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত করার জন্য।