বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় ভারত। সে নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, ভারতের সরকার তার সঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
সোমবার (৬ অক্টোবর) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক মতবিনিময়কালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকে তিনি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক, সীমান্ত ও পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে মতবিনিময় করেন।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে। যত দ্রুত সম্ভব একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা। যে সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসবে, ভারতের সরকার তার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।”
তিনি বলেন, “নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার যে অঙ্গীকার দেখিয়েছে, তাতে আমরা উৎসাহিত। আমরা আশা করছি, কোনো বিলম্ব ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি বৈধ সরকার গঠিত হবে।”
২০২৪ সালের আগস্টে জুলাই আন্দোলনে আওয়ামী লীগের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। সেই সময় থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ; দলটির বেশিরভাগ নেতাকর্মী দেশ-বিদেশে পালিয়ে আছেন।
এই প্রেক্ষাপটে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মিশ্রি বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ও জনগণই নির্ধারণ করবে, তারা কেমন নির্বাচন চায়। এটা শুধু অভ্যন্তরীণ বৈধতার নয়, আন্তর্জাতিক বৈধতার প্রশ্নও। নির্বাচনটি কেমন হবে, বিশ্বও তা গভীরভাবে লক্ষ্য করবে।”
আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন হলে ভারত সেই সরকারের সঙ্গে কাজ করবে কি না—এমন প্রশ্নে মিশ্রি বলেন, “জনগণের ম্যান্ডেট যাদের পক্ষে থাকবে, ভারতের সরকার তাদের সঙ্গেই কাজ করবে। ম্যান্ডেট কিভাবে গঠিত হবে, তা বাংলাদেশের জনগণের বিষয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়া দেখতে চাই, যেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে পারবে। আমরা যে কোনো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।”
বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল, বাংলাদেশ-মিয়ানমার ডেস্কের যুগ্ম সচিব বি. শ্যাম, ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন উপস্থিত ছিলেন।