জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে, ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবসার উপকরণ বানিয়ে দেশকে গ্রাস করার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “ধর্মীয় আবেগকে বিক্রি করে দেশটাকে গিলে খাওয়ার চেষ্টা চলছে। এটিকে আমরা কোনোভাবেই সফল হতে দেব না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অম্লান রাখতে হবে, কারণ সব ধর্মের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছে।”
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “আজকে চেষ্ট করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকেই ভুলিয়ে দেওয়ার। এমন ধারণা দেওয়া হচ্ছে যেন ৭১ কখনও হয়নি, মুক্তিযোদ্ধারা কোনো অবদান রাখেননি। অথচ এই দেশের স্বাধীনতার পেছনে লাখো প্রাণের ত্যাগ রয়েছে। ৭১-এর হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, মা-বোনরা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সেই দুঃসহ স্মৃতি কি কখনও ভুলে যাওয়া সম্ভব?” তিনি দাবি করেন, সুপরিকল্পিত একটি চক্র ইতিহাস বিকৃতি ও বিভাজনের রাজনীতি করে দেশকে হিন্দু-মুসলমান দ্বন্দ্বে ঠেলে দিতে চায়।
খালেদা জিয়া প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “১৯৭১ সালে খালেদা জিয়া তাঁর দুই সন্তান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকে নিয়ে পাকবাহিনীর হাতে কারাবন্দী হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব ও অস্তিত্বের অংশ, যা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।”
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “একটি মহল নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া মানে দেশের আরও সর্বনাশ ঘটানো। এখন দেশের একটি নির্বাচিত সরকার অত্যন্ত জরুরি।” তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানান।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক নুর করিম। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক নাঈম জাহাঙ্গীর, সদস্য সচিব সাদেক আহমদ খান, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মনসুর আলী সরকারসহ অনেকে।