বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আরও এক থেকে দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া। তার মতে, এই সময়ের পর দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে, যদিও সেটি নির্ভর করবে ভারতের কৌশলগত অবস্থান এবং আওয়ামী লীগের পুনরায় সংগঠিত হওয়ার সক্ষমতার ওপর।
সোমবার (২০ অক্টোবর) নিজের ফেসবুক পেজে ‘আগামী পাঁচ বছরে আমরা কোথায় যাচ্ছি?’ শিরোনামের ধারাবাহিক লেখার শেষ পর্বে এই মন্তব্য করেন ইকবাল করিম ভূঁইয়া। তিনি লেখেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আরও ১-২ বছর থাকবে। এরপর বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হতে পারে। তবে তারা পুরো মেয়াদ শেষ করতে পারবে কি না, তা নির্ভর করবে ভারতের অবস্থান ও আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তন কৌশলের ওপর। যদি বিএনপি তার বিরুদ্ধে পরিচালিত আন্দোলন মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়, তাহলে আবারও ১/১১ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনিক অদক্ষতা, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি কিংবা শিক্ষার্থী ও সামাজিক চাপের কারণে যদি সরকার সংস্কারমূলক উদ্যোগে হাত দেয়, তবে নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারই ক্ষমতায় থেকে পুনর্গঠনের পথে এগোতে পারে।
ইকবাল করিম ভূঁইয়ার মতে, “যদি রাজনৈতিক স্থিতি না ফেরে, তাহলে দুর্বল মন্ত্রীরা পরিবর্তিত হবে এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘জাতীয় সরকার’ গঠিত হতে পারে যেখানে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে পারেন।”
তিনি আরও ইঙ্গিত দেন, ভবিষ্যতে সংবিধান সংশোধনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। “সংবিধান পরিবর্তনের গুঞ্জন জোরদার হলে আগামী পাঁচ বছর কেটে যাবে গণপরিষদ নির্বাচন, নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও গণভোটের মতো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে,” লিখেছেন তিনি।
সাবেক সেনাপ্রধানের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আগামী কয়েক বছর দেশকে পার করতে হবে রাজনৈতিক বিভ্রান্তি, অস্থিরতা, প্রতিবাদ, হরতাল-অবরোধ ও সহিংসতার মধ্য দিয়ে। এতে অর্থনীতি আরও দুর্বল হবে এবং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।
তার ভাষায়, “পঙ্গু অর্থনীতি দরিদ্রদের আরও বিপদে ফেলবে; বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচক ধারাবাহিকভাবে পিছিয়ে পড়বে।”
বিশ্লেষক মহলের মতে, ইকবাল করিম ভূঁইয়ার এই মন্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে, বিশেষ করে যখন অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে।