জাতীয় নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে ফের আলোচনায় এলেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। বুধবার সকালে তিনি স্বামী ডেভিড বাফকে সঙ্গে নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। সেখানে তিনি প্রায় এক সপ্তাহ অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে।
এই সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর গুঞ্জন ছড়িয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার বৈঠক হতে পারে। আলোচনায় আসতে পারে জাতীয় নির্বাচন, বিরোধী দলের নিরাপত্তা, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা ও বিএনপির কৌশল।
তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ট্রেসির এটি দ্বিতীয় লন্ডন সফর। জুলাই মাসেও তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন, যেখানে বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও ক্ষমতায় এলে নীতিগত অবস্থান নিয়ে আলাপ হয়। এবারকার বৈঠক আরও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলছে সফরটি ব্যক্তিগত, তবে রাজনৈতিক মহলে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। তাদের প্রশ্ন—বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতির রূপরেখা কি বিদেশের রাজধানীতে বসে নির্ধারিত হচ্ছে? যুক্তরাষ্ট্র কি পরোক্ষভাবে দেশের রাজনৈতিক পথচলা নির্ধারণ করছে?
একজন সাবেক কূটনীতিক মন্তব্য করেন, “ট্রেসি জ্যাকবসনের সফরকে নিছক ব্যক্তিগত বলা কঠিন। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই ‘ট্র্যাক টু ডিপ্লোমেসি’র মাধ্যমে বার্তা আদান–প্রদান করছে। এবারও যদি তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক হয়, তবে তা সরাসরি নির্বাচনী পরিবেশে প্রভাব ফেলবে।”
এদিকে আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যে প্রাক–নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ শেষ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র একদিকে সরকারের সঙ্গে, অন্যদিকে বিরোধী দলের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচনের কাঠামো যদি লন্ডন ও ওয়াশিংটনের আলোচনায় নির্ধারিত হয়, তবে তা দেশের অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দেয়।