চাঞ্চল্যকর এক অডিও ফাঁসকে ঘিরে ফের বিতর্কে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সবুর লিটনের ভাগ্নের সঙ্গে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব সাগুফতা বুশরা মিশমার কথোপকথনের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে টেন্ডার ও ব্যবসায়িক লেনদেনের ভাগাভাগি নিয়ে দর-কষাকষির কথাবার্তা স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।
অডিওতে মিশমা ওই ব্যবসায়ীকে বলেন, “টেন্ডার তো একদিকে না, হাজার রকমের হতে পারে। এখন ঠিক কোন কাজ করছেন, কোনটা আটকে আছে—ওগুলো জানলে বলতে পারব কিভাবে আগাইতে পারি। সেটা পার্টনারশিপে, নাকি ফিফটি-ফিফটি যেভাবেই হোক।”
এরপর তিনি স্পষ্ট ভাষায় দাবি জানান, “আপনাদের হেল্প করব বললে আমারও তো একটা ক্লারিফিকেশন লাগবে, ওটা তো আপনাদের এনশিওর করতে হবে।”
অন্যদিকে ব্যবসায়ীটি তাকে জবাবে বলেন, “আপনি আসলে কী রকম প্রফিট চান সেটা খুলে বলেন। আমি আপনার ভাইয়ের মতো। আমি চাই আপনি থাকলে আমার কোটি টাকার ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারব।”
অডিওতে মিশমা আরও বলেন, “টেন্ডার কি আপনার হাতে নাই? চলমান নাই? আমাদের অনেকেই তো কাজ করছে, এটা আসলে এড়ানো যায় না। সবাই সবদিকেই কাজ করতেছে।”
রাজনৈতিক মহলে এই অডিও ফাঁস ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলছেন, এটি এনসিপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের অর্থনৈতিক স্বার্থে রাজনীতি ব্যবহারের নগ্ন উদাহরণ। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে নিয়োগ, বদলি, টেন্ডার বাণিজ্য সহ নানা অনিয়মে বারবার এনসিপির নাম এসেছে, যা সামগ্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য চরম অশনি সংকেত বলছেন বিশ্লেষকরা।
উল্লেখ্য, এর আগেও সাগুফতা বুশরা মিশমা বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন। চট্টগ্রাম বন্দরে ঘনিষ্ঠ অনুসারীর চাঁদাবাজির ভিডিও ফাঁস, এমনকি বন্দর অন্দরমহলে তার ঘোরাফেরা নিয়ে দলীয় মহলেই প্রশ্ন উঠেছিল।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিশমা বলেন, “এটা আমাদের দলের কেউ করাচ্ছে। আমার পেছনে লেগেছে কিছু লোক। যদি নাম জানতে পারি, আমি ব্যবস্থা নেব।”
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অডিও এনসিপির সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও স্বার্থসংঘাতের আরেকটি প্রমাণ হিসেবে দেখা দেবে।