প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা (পি.টি) বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। শনিবার (৮ নভেম্বর) দেওয়া এক আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে “খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং” নামে অভিহিত করে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করে বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিশুদের শারীরিক-মানসিক বিকাশের ওপর চরম আঘাত হানছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংগীত, আবৃত্তি, শারীরিক শিক্ষা চর্চা একজন শিশুর পূর্ণাঙ্গ বেড়ে ওঠার অপরিহার্য অংশ। মানবিক অনুভব, মানসিক প্রশান্তি, সৃজনশীলতা এবং শারীরিক সুস্থতায় এসবের অবদান অপরিসীম। তাই শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈজ্ঞানিক, অনৈতিক ও অমানবিক বলে উল্লেখ করেছে দলটি।
“গান গাইতে না দেওয়া, শরীরচর্চা করতে বাধা দেওয়া, শিশুদের মন ও শরীরকে সংকীর্ণ গণ্ডিতে আটকে দেওয়ার শামিল,” বিবৃতিতে বলা হয়।
আওয়ামী লীগ আরও দাবি করে, সংগীত দেশ, সমাজ ও সভ্যতার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সংগীত মানুষকে মুক্তচিন্তা ও সৌন্দর্যের শিক্ষা দেয়, আত্মার শুদ্ধি ঘটায় এবং সমাজকে সভ্যতার দিকে এগিয়ে নেয়। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগীত ছিল মুক্তিকামী মানুষের সাহস, প্রেরণা ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের বড় শক্তি।
“যারা সংগীত এবং শিল্প-সংস্কৃতিকে দমন করতে চায় তারা মূলত অগ্রগতি ও মানবতার বিরুদ্ধ শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে,” বিবৃতিতে বলা হয়।
এছাড়া আওয়ামী লীগ মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকারের এই সিদ্ধান্ত শিশুদের সম্ভাবনা ও বিকাশের পথ রুদ্ধ করবে। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিটি শিশু অসীম প্রতিভা ও সম্ভাবনার ভাণ্ডার, আর সংগীত-শরীরচর্চা তাদের ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও আত্মবিশ্বাস তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখে। তাই শিশুদের বিকাশ রুদ্ধ হবে এমন কোনো পদক্ষেপ রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছে দলটি।
আওয়ামী লীগ প্রশ্ন তোলে, প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় যখন মানোন্নয়ন, সৃজনশীলতা, মানসিক স্বাস্থ্য ও খেলাধুলার সুযোগ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে, ঠিক তখনই কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো? দলটির মতে, এই সিদ্ধান্ত দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও সংকুচিত করবে, সৃজনশীল প্রজন্ম তৈরির পথে বাধা হবে।
বিবৃতির শেষে আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা জানায়, আগামীর বাংলাদেশ হবে সংস্কৃতিমনা, মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ এবং মুক্ত চিন্তার দেশ। তাই শিশুদের শৈল্পিক, মানসিক ও শারীরিক বিকাশের বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত দ্রুত বাতিলের দাবি জানায় দলটি।