শহরজুড়ে আতঙ্ক ও উত্তেজনা
মানিকগঞ্জে ‘তৌহিদী জনতা’র হামলায় আবুল সরকারের তিন সমর্থক আহত
মানিকগঞ্জে ধর্ম অবমাননার মামলায় গ্রেপ্তার বাউল শিল্পী আবুল সরকারের সমর্থকদের ওপর ‘তৌহিদী জনতা’র হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠসংলগ্ন বিজয় মেলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন—আব্দুল আলীম (২৫), আরিফুল ইসলাম (২৯) এবং জহিরুল ইসলাম (৩২)। তাদের পুলিশ উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তৌহিদী জনতার একাংশ বিক্ষোভ শেষে বাউলদের ওপর হামলা চালালে তিনজন আহত হন। ঘটনাস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে সকাল ১০টায় ‘তৌহিদী জনতা’ ব্যানারে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে পোস্ট অফিস মোড়ে সমাবেশে বক্তারা বাউল শিল্পী আবুল সরকারের ‘ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড’ বন্ধ এবং তার শাস্তির দাবি জানান। সভায় হাফেজ মাওলানা আশিকুর রহমান, মুফতি সাঈদ নূরসহ বেশ কয়েকজন বক্তা বক্তব্য দেন। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।
সমাবেশ চলাকালে শহীদ মিনারের দক্ষিণ পাশে আবুল সরকারের অনুসারীরা অবস্থান নিলে বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ সেখানে গিয়ে হামলা ও ধাওয়া দেয়। হামলা থেকে বাঁচতে কয়েকজন পুকুরে ঝাঁপ দেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। এসময় তিনজন বাউল অনুসারী গুরুতর আহত হন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, “মিছিল শান্তিপূর্ণভাবেই চলছিল। কিন্তু ভেতর থেকে হঠাৎ কিছু লোক বাউলদের ধাওয়া দেয়, তখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জাবরা এলাকায় এক গানের আসর থেকে বাংলাদেশ বাউল সমিতির সভাপতি আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে মুফতি আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ঘিওর থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তার আবুল সরকার সাটুরিয়া উপজেলার পারতিল্লী এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয়ভাবে ‘ছোট আবুল সরকার’ নামে পরিচিত। রবিবার তার জামিন শুনানি হলেও আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।
ঘটনার পর মানিকগঞ্জ শহরে আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
