ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও পরিবহন শ্রমিক পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জেরে রোববার সকাল থেকে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাগামী সব বাস বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা মোটরযান মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন। এতে ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হওয়ায় ঢাকায় কর্মরত মানুষ বিকল্প যানবাহনে ফিরতে চেষ্টা করলেও সীমিত সংখ্যক ট্রেন ও মাইক্রোবাসে অতিরিক্ত ভিড় তৈরি হয়েছে। কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই টিকিট কেটে রেখেও গন্তব্যে যেতে পারছেন না। সকাল থেকে ময়মনসিংহ নগরীর বাস টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের ক্ষোভ ও হতাশা ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে ঢাকাগামী একটি বাসে উঠতে গিয়ে যাত্রী আবু রায়হানের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর বাগ্বিতণ্ডার জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। রায়হান নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিলেও শ্রমিক ঝন্টু তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ময়মনসিংহের মাসকান্দা এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ শ্রমিক অরুণ ঝন্টুকে আটক করে।
এর পরদিন থেকে ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতি ও জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন যৌথভাবে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়। জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, “এই সিদ্ধান্ত মালিক সমিতির। এনসিপির কিছু নেতা ইচ্ছাকৃতভাবে ঝামেলা পাকিয়ে পরিবহন সেক্টরে অনৈতিক সুবিধা নিতে চায়।”
তিনি জানান, শনিবার জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হক শামীম পরিচালিত ১৬টি বাস পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত হলেও ঢাকায় মালিক-শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের বাস চলাচলও বন্ধ থাকে।
আলমগীর মাহমুদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আটক শ্রমিককে মুক্তি না দেওয়া এবং নিষিদ্ধ বাসগুলোর চলাচল অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।”
ব্যবসায়ী ও সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, পাঁচ জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ বন্ধ থাকায় যাত্রীদের পাশাপাশি ব্যবসায়িক পরিবহনেও প্রভাব পড়ছে। দ্রুত সমাধান না হলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।