ছোট লক্ষ্য, বড় হতাশা—আরেকবার ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভেস্তে গেল বাংলাদেশের ফাইনালের স্বপ্ন। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১ রানে হেরে বিদায় নিতে হলো টাইগারদের। এর ফলে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান।
১৯৮৪ সালে এশিয়া কাপ শুরুর পর থেকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এটাই প্রথম ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল। বাংলাদেশের জন্য এটি এক বিরল সুযোগ হাতছাড়া করার আক্ষেপ।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে পাকিস্তান। প্রথম ওভারে তাসকিন আহমেদ ফিরিয়ে দেন সাহিবজাদা ফারহানকে। এ উইকেটের মাধ্যমে তিনি স্পর্শ করেন নিজের ১০০তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি শিকারের মাইলফলক। এরপর শেখ মেহেদি ও রিশাদ হোসেনের স্পিনে ধস নামে পাকিস্তানের টপ অর্ডারে। একপর্যায়ে ১১ ওভারে ৫ উইকেটে মাত্র ৪৯ রান সংগ্রহ করে তারা।
তবে শাহিন শাহ আফ্রিদির ১৯ রান ও মোহাম্মাদ নাওয়াজের ২৫ রানের ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। সর্বোচ্চ ৩১ রান আসে মোহাম্মাদ হারিসের ব্যাট থেকে। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩৫ রান। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন নেন ৩ উইকেট, রিশাদ ও মেহেদি নেন ২টি করে।
১৩৬ রানের সহজ লক্ষ্যও পার হতে পারল না বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফেরেন পারভেজ হোসেন ইমন। এরপর সাইফ হাসান ও হৃদয় শুরুতে কিছুটা লড়াই করলেও দুজনই ব্যর্থ হন ইনিংস বড় করতে। উইকেট হারানোর মিছিলে যোগ দেন সোহান, শেখ মেহেদি ও অধিনায়ক জাকের আলি।
একপর্যায়ে বাংলাদেশের আশা জাগান শামীম হোসেন। তার ২৫ বলে ৩০ রানের ইনিংসে কিছুটা লড়াই ফিরে আসে। তবে আফ্রিদির ধূর্ত স্লোয়ারে রিভার্স ল্যাপ খেলে তিনিও বিদায় নিলে কার্যত শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের সম্ভাবনা। শেষদিকে রিশাদ কিছু রান তুললেও ফাইনালে যাওয়ার টিকিট আর মেলেনি।
বাংলাদেশ থামে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রানে। শাহিন শাহ আফ্রিদি দারুণ বোলিং করে নেন ৩ উইকেট, পান ম্যাচসেরার পুরস্কার।
এই জয়ে পাকিস্তান পা রাখে ফাইনালে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। ১৭তম আসরে এসে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে দুই ক্রিকেট পরাশক্তি।
বরাবরের মতোই বাংলাদেশের জন্য এটিও একটি শিক্ষা সফর হয়ে রইল—বোলিংয়ে সম্ভাবনা তৈরি করলেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভেস্তে গেল বড় স্বপ্ন।