গৌহাটির আসাম ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হলো নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে ম্যাচকে ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে এক বিশেষ অতিথি দলের উপস্থিতি—অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাসিত আফগান নারী ক্রিকেটাররা।
তালেবান শাসনামলে আফগানিস্তানে নারীদের খেলাধুলা নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় এই ক্রিকেটাররা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। বর্তমানে তারা অস্ট্রেলিয়ায় এবং আংশিকভাবে যুক্তরাজ্য ও কানাডায় বসবাস করছেন। স্থানীয় লিগে নিয়মিত খেলা হলেও তাদের আফগানিস্তানের জাতীয় প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি আফগান ক্রিকেট বোর্ড। তাই বিশ্বকাপে আনুষ্ঠানিক কোনো ভূমিকায় নয়, শুধু দর্শক হিসেবেই থাকছেন তারা।
আসাম ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তারঙ্গ গগৈ বলেন, “বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়ার নির্দেশনায় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। আফগান খেলোয়াড়রা উদ্বোধনী দিনে মাঠে আসবেন, তাদের জন্য বিশেষ আয়োজনও রয়েছে।”
এ নিয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি আইসিসি। তবে এ বছরের এপ্রিলে সংস্থাটি জানিয়েছিল, আফগান নারী ক্রিকেটারদের সহায়তায় একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। এর মাধ্যমে কোচিং, মেন্টরশিপ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। অর্থায়ন করবে আইসিসি এবং বিশ্বের তিন ধনী বোর্ড—বিসিসিআই, ইসিবি ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
জুলাইয়ে আইসিসির বার্ষিক সভায় ঠিক হয়, নির্বাসিত আফগান নারী ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপ চলাকালে ভারতে সফর করবেন। প্রথমে পরিকল্পনা ছিল, তারা বেঙ্গালুরুর ক্যাম্পে ভারতীয় ঘরোয়া দলের বিপক্ষে খেলবেন এবং কয়েকটি বিশ্বকাপ ম্যাচেও উপস্থিত থাকবেন। তবে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উদ্বোধনী ম্যাচেই তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত, বাকি সূচি অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে আফগান নারীদের শিক্ষালাভ, জনজীবনে অংশগ্রহণ এমনকি জনসমক্ষে কথা বলাও প্রায় নিষিদ্ধ। ২০২০ সালে আফগান বোর্ড ২৫ জন নারী ক্রিকেটারের সঙ্গে চুক্তি করলেও কখনো আনুষ্ঠানিক দল গঠন করতে পারেনি। আজকের এই প্রতীকী উপস্থিতি তাই কেবল ক্রীড়াজগত নয়, নারী অধিকারের পক্ষেও এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।