সর্বশেষ

ডেঙ্গু সংক্রমণ ৫৩% বৃদ্ধি, অক্টোবর মাসে সতর্কতার আহ্বান

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৪৯
ডেঙ্গু সংক্রমণ ৫৩% বৃদ্ধি, অক্টোবর মাসে সতর্কতার আহ্বান

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৫৩% বেড়েছে। একই সময়ে মৃত্যু বেড়েছে প্রায় ১৬%। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ৪৮,৪৯১ জনের শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ২০২ জনের। এর মধ্যে ৬০% রোগী রাজধানীর সরকারি ছয়টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

 

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, অক্টোবর মাসে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। জেলা পর্যায়ে জটিল রোগী ব্যবস্থাপনা দুর্বল হওয়ায় ঢাকায় রোগীর চাপ বাড়ছে। ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, দেরিতে হাসপাতালে আসায় রোগীদের জটিলতা বাড়ছে। তিনি বয়স্ক, অন্তঃসত্ত্বা ও একাধিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন।

 

বরগুনা, ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, গাজীপুর ও কুমিল্লায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। বরগুনায় আক্রান্ত ৭,৩৪১ জন, মৃত্যু ১৪ জনের। ঢাকায় আক্রান্ত ১৩,০১৩ জন, মৃত্যু ১২৩ জনের। চট্টগ্রামে আক্রান্ত ২,৩৬৯ জন, মৃত্যু ২০ জনের। বরিশালে আক্রান্ত ২,৪৩৬ জন, মৃত্যু ১৮ জনের।

 

আইইডিসিআর,বি পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরিন জানান, বরগুনায় সুপেয় পানির সংকটে বৃষ্টির পানি জমিয়ে রাখার প্রবণতা রয়েছে, যা এডিস মশার বিস্তারে সহায়ক। এসব পানির আধারে ব্যাপক লার্ভা পাওয়া গেছে।

 

দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে ১১টিতে নেই কোনো কীটতত্ত্ববিদ। অথচ এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২৬টি জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অনুমোদিত পদ থাকলেও ১২টি পদ শূন্য রয়েছে।

 

চলতি বছর ডেঙ্গুর ৭০% সংক্রমণ ডেন-২ স্ট্রেইনের, যা সেকেন্ডারি সংক্রমণে গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো চিকিৎসা না নিলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ে।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আবু জাফর জানান, অধিকাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দুই–তিন দিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছেন। ২০–৩০ বছর বয়সী ও শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে। তিনি সময়মতো চিকিৎসা নেওয়ার ওপর জোর দেন।

 

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ঢাকার বাইরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু স্থানীয় হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি দুর্বল। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমও প্রশ্নবিদ্ধ।

 

অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, অক্টোবরে ভয়াবহ পরিস্থিতি এড়াতে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। দেরি হলে শুধু মৃত্যুর সংখ্যা নয়, দেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সব খবর