চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুধু এই মাসেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৭৬ জনের, যা বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমনকি বছরের একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ডও হয়েছে এই মাসে।
২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মোট ১৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। জানুয়ারিতে মৃত্যু হয় ১০ জনের, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জনের। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। এরপর এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে খারাপ হতে শুরু করে—এপ্রিলে মৃত্যু হয় ৭ জনের, মে মাসে ৩ জনের। জুনে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়ায় ১৯ জনে, জুলাইয়ে ৪১ জন এবং আগস্টে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ডেঙ্গুবিষয়ক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে ৫৫৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৭ হাজার ৩৪২ জন ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৭৯৬ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেপ্টেম্বরের বৃষ্টিপাত, আবহাওয়া এবং মশার বিস্তার ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়িয়ে দিয়েছে। নগর এলাকায় পানি জমে থাকা, পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং জনসচেতনতার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও মৃত্যুর সংখ্যা ও আক্রান্তের হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা, জমে থাকা পানি অপসারণ, মশারি ব্যবহার এবং জ্বর হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ও নাগরিকদের সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া এই সংকট মোকাবিলা করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।