দেশের বিভিন্ন স্থানে পৃথক ঘটনায় নির্বাচন কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, আদালতের সামনে হাতবোমা বিস্ফোরণ এবং যাত্রীবাহী বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জননিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাগুলোর তদন্ত শুরু করেছে এবং নিরাপত্তা জোরদারের ঘোষণা দিয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের স্টোররুমে শুক্রবার ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসাইন জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে—মাস্ক পরা এক যুবক গেটের পশ্চিম পাশের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে জানালা দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভেতরে থাকা দারোয়ান হামিম আগুনের আঁচ টের পেয়ে চিৎকার করলে দুর্বৃত্ত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ২০০৮ ও ২০০৯ সালের ভোটারদের দ্বিতীয় ফরমসহ কিছু নথিপত্র পুড়ে গেছে। দ্রুত আগুন নেভানো সম্ভব হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ঘটনার পর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ, জেলা প্রশাসক এস এম মেহেদী হাসান এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল হক জানান, তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের শনাক্তে অভিযান শুরু হয়েছে। নির্বাচন কার্যালয়গুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গোপালগঞ্জে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সামনে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে পরপর দুটি হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। জেলা পুলিশের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আদালতের গেটসংলগ্ন সড়কে দুর্বৃত্তরা বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। বিস্ফোরণে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ালেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার হোসেন জানান, বোমাগুলোতে স্প্রিন্টার না থাকলেও গানপাউডার থাকায় শব্দ বেশি হয়েছে। ঘটনার পর সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে টহল জোরদার করা হয়েছে।

নোয়াখালীর সদর উপজেলার সোনাপুর বাস টার্মিনালে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পার্কিং করা একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন লাগে। সুধারাম থানার ওসি মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, চালকের সহকারীরা বাসের ভেতরে মশার কয়েল জ্বালিয়ে রেখে বাইরে যান। প্রাথমিকভাবে কয়েল থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে বাসের চার থেকে পাঁচটি আসন পুড়ে গেছে।

অন্যদিকে ঢাকার বাড্ডা লিংক রোডে শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে দেওয়ান পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুনে জ্বলতে থাকা বাসটি একপর্যায়ে নিজে নিজে গড়াতে শুরু করলে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে সেই দৃশ্য দেখা যায়।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার মো. শাহজাহান জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে আগুন লাগতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগেই আগুন নিভে যায়।