বাংলাদেশে শীতের দাপট দিন দিন বাড়ছে। শনিবার সকালে আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন। এখানকার বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ। গত কয়েকদিন ধরে তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা দ্রুত কমছে এবং মৃদু শৈত্যপ্রবাহের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে শনিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল থেকে ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ অতিরিক্ত কাপড় জড়িয়েও কাজে হিমশিম খাচ্ছেন।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একই সময়ে তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চা-বাগান এলাকায় শীতের প্রভাব বেশি পড়ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিললেও ঠান্ডা বাতাসে কাজকর্মে সমস্যা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় শনিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেলা বাড়লেও সূর্যের তেমন উত্তাপ না থাকায় শীতের তীব্রতা কমছে না। খেটে-খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে সাধারণ জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখানকার নদী তীরবর্তী এলাকায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। দরিদ্র পরিবারগুলো শীতবস্ত্রের সংকটে রয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে। তখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছয় ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।
শীতের কারণে শিশু, বয়স্ক ও রোগীরা বেশি ভুগছেন। দরিদ্র পরিবারগুলো শীতবস্ত্রের সংকটে রয়েছে। জেলা প্রশাসনগুলো ইতিমধ্যে শীতার্তদের সহায়তায় কম্বল বিতরণ শুরু করেছে। পঞ্চগড়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে ৮ হাজারের বেশি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৬৫ হাজার কম্বলের চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
দেশের উত্তরাঞ্চল ও কিছু মধ্যাঞ্চলীয় জেলায় শীতের প্রভাব তীব্র হচ্ছে। পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, শ্রীমঙ্গল, চুয়াডাঙ্গা ও রাজারহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় শীতের প্রকোপ স্পষ্ট। আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করেছে, ডিসেম্বরের শেষভাগে শৈত্যপ্রবাহ আরও তীব্র হতে পারে। ফলে জনজীবন ও কৃষি উৎপাদনে এর প্রভাব পড়বে।