রাজধানীর খুচরা বাজারে আবারও নিত্যপণ্যের দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ভোজ্যতেল, ডিম ও সবজির দাম বেড়ে ভোক্তার কাঁধে চাপ পড়েছে আরও বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য না থাকায় বাজারে এই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, শান্তিনগর ও তুরাগের নতুনবাজার এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ১০ টাকা বেড়ে ৯৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক লিটারের বোতলে দাম বেড়েছে ১৯৫ টাকা পর্যন্ত। পামঅয়েলের লিটারপ্রতি দাম ২ টাকা বেড়ে ১৬২ টাকায় উঠেছে। যদিও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তেলের দাম বৃদ্ধির অনুমোদন দেয়নি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জানিয়েছে, গত সপ্তাহের তুলনায় সয়াবিন ও পামঅয়েলের দাম লিটারে গড়ে ১–২ টাকা বেড়েছে।
ডিমের দামও বাড়তি
সবজির দাম বাড়ায় বিকল্প প্রোটিন হিসেবে ডিমের চাহিদা বেড়েছে, ফলে দামও লাফিয়ে উঠেছে। বর্তমানে ফার্মের বাদামি ডিম প্রতি ডজন ১৪৮ থেকে ১৫০ টাকা, সাদা ডিম ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা এক সপ্তাহ আগেও যথাক্রমে ১৪০ ও ১৩৫ টাকা ছিল।
তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন, “বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহ কমে গেছে, ফলে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। সাময়িক এই বৃদ্ধির পর দাম আবার কমে আসবে।”
খামারিরা অভিযোগ করছেন, ডিমের দর নির্ধারণে তাদের কোনো ভূমিকা নেই; রাজধানীর পাইকারি আড়তগুলো থেকে দাম নির্ধারিত হয়। গাজীপুরের খামারি তফাজ্জল হোসেন বলেন, “যদি খামারিরা সরাসরি ঢাকায় বিক্রি করতে পারত, তবে ভোক্তারা কম দামে ডিম পেত।”
সবজিতেও স্বস্তি নেই
রাজধানীর বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি। বরং পটল, বেগুন, ঢেঁড়শসহ বিভিন্ন সবজির দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি পটল ৮০ টাকা, বেগুন ১০০ থেকে ১৬০ টাকা, করলা ও বরবটি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, আর পেঁপে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শীতকালীন সবজির দামও চড়া। প্রতি কেজি শিম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ছোট ফুলকপি বা বাঁধাকপি ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির পাশাপাশি মাছের বাজারেও আগুন নদীর মাছ কেজিপ্রতি ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যদিও চাষের মাছ কিছুটা সাশ্রয়ী।
সব মিলিয়ে নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না, বরং বাড়ছে সাধারণ ভোক্তার উদ্বেগ।