সম্প্রতি রাজধানীতে ছায়ানটের সংস্কৃতি-ভবনে ঘটে যাওয়া ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠনটি। ছায়ানট বলছে, এ ধরনের ঘটনা শুধু স্থাপনার ক্ষতি নয়, বরং বাঙালির দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক চর্চা ও মুক্তচিন্তার ওপর আঘাত।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নাচ–গান ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে ঘিরে কিছু গোষ্ঠীর বিরূপ অবস্থান দীর্ঘদিন ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাদের দাবি, সাম্প্রতিক এই হামলাও সেই ধারাবাহিকতার অংশ।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ এবং সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার পক্ষে অবস্থান জানাতে ‘গানে গানে সংহতি-সমাবেশ’ আয়োজন করেছে ছায়ানট। আজ বিকেল চারটায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনের সামনে এই শান্তিপূর্ণ সংহতি-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ছায়ানটের উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সংগঠনের শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করেন বাংলা সংস্কৃতি, মানবতা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও প্রতিবাদের শক্তিকে ধারণ করা একাধিক গান। এর মাধ্যমে সহিংসতা ও ভাঙচুরের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক ভাষায় প্রতিবাদ জানানোর কথা জানায় আয়োজকরা।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশে পরিবেশিত গানগুলোর মধ্যে ছিল—‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’, ‘ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি’, ‘চল্ চল্ চল্ ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল’, ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’, ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু–মুসলমান’, ‘মানুষ ছেড়ে খ্যাপা রে তুই’, ‘মানুষ হ’ মানুষ হ’ আবার তোরা মানুষ হ’, ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘হিমালয় থেকে সুন্দরবন’ এবং ‘আমার প্রতিবাদের ভাষা’সহ আরও কয়েকটি কালজয়ী গান। সমাবেশ শেষ হয় সমবেত জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে।
এর আগে আয়োজকদের পক্ষ থেকে সব সচেতন নাগরিককে এই শান্তিপূর্ণ সংহতি-সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। ছায়ানটের ভাষ্য, সংস্কৃতির জায়গাগুলো সুরক্ষা ও যত্নের দাবিদার, আর এসব জায়গায় ভাঙচুর মানে সমাজের সামগ্রিক মূল্যবোধ ও সহনশীলতার ওপর আঘাত।