শেরপুর সদর উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের গণইভরুয়াপাড়া গ্রামে একটি বাউল গানের আসরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার (রাত ১১টা) শামীম ড্রাইভারের বাড়ির পাশে সদ্য ধান কাটা ক্ষেতে আয়োজিত এই বাউল গানের অনুষ্ঠানটি আকস্মিক হামলার মুখে পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনার দুদিন পেরিয়ে গেলেও এলাকায় স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গানের আসর চলাকালে কয়েকজন যুবক হঠাৎ সেখানে ঢুকে গালাগালি শুরু করে এবং “এখানে গান-বাজনা চলবে না” বলে হুমকি দেয়। এরপর তারা হারমোনিয়াম, বাঁশিসহ বাউল গানের বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাঙচুর করে। হামলার পর দর্শকদের মধ্যে হইচই শুরু হয় এবং নিরাপত্তার আশঙ্কায় অনেকেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক উত্তেজিত কণ্ঠে গালাগালি করতে করতে মঞ্চের সরঞ্জাম ভাঙচুর করছে। ভিডিওটি স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তোলে।
অনুষ্ঠানের আয়োজক শামীম মিয়া মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি জানান, ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাউল গানের আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ কয়েকজন এসে কোনো কারণ না জানিয়েই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানানোর কথা ভেবেছিলেন, তবে হামলাকারীদের সঙ্গে ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার আশঙ্কায় পরে আর অভিযোগ করেননি।
গণইভরুয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোফজ্জল হোসেন বলেন, “গান শুনতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ গণ্ডগোল শুরু হলে দ্রুত চলে আসি। পরে শুনেছি হারমোনিয়াম ও বাঁশি ভেঙে ফেলা হয়েছে।” একই এলাকার দোকানদার বুলবুল জানান, গোলযোগের খবর শুনে তিনি সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সামেদুল ইসলাম, শেখহাটি এলাকার রবিউল এবং পল্লী দন্ত চিকিৎসক আসাদ আলীসহ আরও অনেকে জানান, তারা নিজেরা হামলা দেখেননি, তবে ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলার কথা শুনেছেন। কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি ধারণা করছেন, অনুষ্ঠানে অতিথি নির্ধারণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ থেকেই হামলার সূত্রপাত হতে পারে।
এ বিষয়ে শেরপুর সদর থানার নবাগত ওসি সোহেল রানা বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পুলিশ পায়নি। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নাসরিন আক্তারও জানান, শনিবার সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।